বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে তারেক রহমানের ব্যবহারের জন্য একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। এই গাড়িতেই বিমানবন্দর থেকে শুরু করে দিনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যাতায়াত করবেন তিনি।
দলীয় একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার কিছুক্ষণ আগে বুলেটপ্রুফ গাড়িটি বিমানবন্দর এলাকায় প্রবেশ করে। একই সঙ্গে বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় নেতা-কর্মীরাও অবস্থান নিতে শুরু করেন। তারেক রহমানকে বরণ করতে প্রস্তুত রয়েছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১৭ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তারেক রহমান। তাকে বহনকারী বিমানটি ছিল বিমানের নিয়মিত ফ্লাইট ‘বিজি ২০২’। একই ফ্লাইটে তার সঙ্গে দেশে ফিরছেন স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।
ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে তিনি ভিআইপি লাউঞ্জ ‘রজনীগন্ধা’য় কিছু সময় অবস্থান করবেন।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারেক রহমান সড়কপথে কুড়িল হয়ে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মিত সংবর্ধনা মঞ্চে যাবেন। সেখানে উপস্থিত নেতা-কর্মী ও সমবেত জনতার উদ্দেশে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেবেন বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
এরপর ৩০০ ফিট এলাকা থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি ব্লকের গেট ব্যবহার করে তিনি সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। সেখানে বিকেল ৪টা ১০ মিনিট থেকে প্রায় এক ঘণ্টা তিনি তার অসুস্থ মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাশে অবস্থান করবেন। দীর্ঘদিন পর মায়ের সঙ্গে তার এই সাক্ষাৎ রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসভবন ‘ফিরোজা’য় যাবেন। সেখানেই তার দিনের কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সমন্বিতভাবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
নিরাপত্তার স্বার্থে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। একই সঙ্গে বিমানবন্দর এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় সোয়াট টিমকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দীর্ঘ সময় পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিএনপির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে দলীয়ভাবে শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।
Leave a comment