ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা টানা ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া মুষলধারের বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ও দেয়াল ধসসহ নানা দুর্ঘটনায় অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মৃতদের বেশিরভাগই শহরের মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার বেনিয়াপুকুর, কালিকাপুর, নেতাজিনগর, গড়িয়াহাট ও ইকবালপুর এলাকার বাসিন্দা। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতার কারণে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বহু নিচু এলাকায় বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হাজারো মানুষ। পরিস্থিতি বিবেচনায় বেশ কয়েকটি স্কুল ছুটি ঘোষণা করেছে।
কলকাতা পৌরসভার তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে—
• গড়িয়া কামদাহারি: ৩৩২ মিমি
• যোধপুর পার্ক: ২৮৫ মিমি
• কালিঘাট: ২৮০ মিমি
• তোপসিয়া: ২৭৫ মিমি
• বালিগঞ্জ: ২৬৪ মিমি
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে এ টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা ও আশপাশের জেলায় আরও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে জলাবদ্ধতা ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে।
দুর্গাপূজা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে এই দুর্যোগে আয়োজকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। টানা বর্ষণে পূজামণ্ডপ ও মঞ্চ ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। প্রস্তুতি কাজও ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আয়োজকেরা। কলকাতা বিমানবন্দরেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ফ্লাইট ধরতে হিমশিম খাচ্ছেন। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, টানা বর্ষণের কারণে ফ্লাইট বিলম্বিত হতে পারে। যাত্রীদের আগে থেকেই ফ্লাইট স্ট্যাটাস যাচাই করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, বজ্রঝড় ও বৃষ্টির কারণে বিমানবন্দরের কার্যক্রম ধীরগতিতে চলছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রেল ও মেট্রো সার্ভিসেও বিঘ্ন ঘটছে। কলকাতায় বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার এ পরিস্থিতি শহরজুড়ে মানবিক ও অবকাঠামোগত সংকট তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছরই এমন দুর্ভোগ দেখা দেয়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।



Leave a comment