ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের ওপর আরোপিত যেকোনো ‘পুনর্বহাল’ করা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলার মতো প্রস্তুতি রয়েছে দেশের। শনিবার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, বাইরের চাপ দিয়ে ইরানকে থামানো যাবে না, বরং নতুন পথ তৈরি করে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা তাদের রয়েছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে শুক্রবার ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহারের প্রস্তাব ভোটে গৃহীত হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার উত্থাপিত প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় নয় দেশ। চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান ও আলজেরিয়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও দক্ষিণ কোরিয়া ও গায়ানা ভোটদানে বিরত থাকে। এর ফলে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা আপাতত শেষ হয়ে যায়।
প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, “তারা নাতাঞ্জ বা ফর্দোতে হামলা চালাতে পারে, কিন্তু বোঝা উচিত—এসব স্থাপনা মানুষ বানিয়েছে, মানুষ আবার নতুন করে গড়ে তুলবে।” গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছিল, সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, হামলা বা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরানকে দমিয়ে রাখা যাবে না।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি গত মাসে অভিযোগ তুলেছিল, ইরান ২০১৫ সালের জেসিপিওএ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করে। আগামী সপ্তাহে সমঝোতা না হলে ইরানের ওপর অস্ত্র বাণিজ্য, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আবার কার্যকর হবে। পাশাপাশি দেশটির বৈশ্বিক সম্পদ জব্দ করা ও ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।
২০০৬ সাল থেকে ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে জাতিসংঘ। তবে ২০১৫ সালের চুক্তির মাধ্যমে কিছুটা শিথিলতা আসে। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে একতরফাভাবে সরে যাওয়ার পর থেকে উত্তেজনা আবার বেড়ে যায়। তবুও ইরান বারবার বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, অস্ত্র তৈরির জন্য নয়।
পেজেশকিয়ান দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “অতিরিক্ত চাপ বা বাড়াবাড়ি দাবির কাছে ইরান কখনো নতি স্বীকার করবে না। পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে।”

Leave a comment