দেশের ৪১ জেলায় ২,৩১০টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান কর ও ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করছে। সবচেয়ে বেশি নিবন্ধনহীন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে নওগাঁ (২২০), রংপুর (২০২) ও টাঙ্গাইল (১৯৯) জেলায়।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা হস্তান্তর করেছে। গত ১২ মার্চ বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের কাছে এ তালিকা জমা দেন। এর আগে ঢাকা মহানগরের কর ও ভ্যাট নিবন্ধনবিহীন ২,৩৩০টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের তালিকাও এনবিআরকে দেওয়া হয়েছিল।
ঢাকা বিভাগের নরসিংদীতে ৪৯টি, টাঙ্গাইলে ১৯৯টি, নারায়ণগঞ্জে ১২৪টি ও গাজীপুরে ১৭টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন নেই।
ময়মনসিংহ বিভাগে ময়মনসিংহে ৩৪টি, জামালপুরে ২৪টি, নেত্রকোনায় ২৫টি ও শেরপুরে ২৫টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান কর ও ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের ৪৪৮টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নেই। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ১২০টি, চাঁদপুরে ১০০টি, ফেনীতে ৫৮টি, লক্ষ্মীপুরে ১০৩টি, কুমিল্লায় ৩৮টি, নোয়াখালীতে ৯টি, রাঙামাটিতে ১৬টি ও খাগড়াছড়িতে ৪টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
রাজশাহী বিভাগের ৫৪১টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনবিহীন। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৫টি, রাজশাহীতে ৮০টি, নওগাঁয় ২২০টি, নাটোরে ৪৬টি, পাবনায় ৯৩টি, জয়পুরহাটে ৯টি ও সিরাজগঞ্জে ১৮টি।
খুলনা বিভাগে সাতক্ষীরায় ২৯টি, যশোরে ১২টি, মাগুরায় ৩৫টি, ঝিনাইদহে ২১টি ও কুষ্টিয়ায় ১১টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট দেয় না।
রংপুর বিভাগের রংপুরে ২০২টি, দিনাজপুরে ১৫টি, গাইবান্ধায় ৬৭টি, কুড়িগ্রামে ৩৭টি ও লালমনিরহাটে ১২টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনহীন।
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জে ১১৩টি, সিলেটে ৪০টি ও মৌলভীবাজারে ১০টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন নেই।
বরিশাল বিভাগে বরিশাল সদরে ১০২টি, ভোলায় ৩৩টি, পিরোজপুরে ১৭টি ও ঝালকাঠিতে ৬৮টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট দেয় না।
দেশে প্রায় ৪০,০০০ জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান থাকলেও, এর মধ্যে মাত্র ৮,০০০টি (২০%) ভ্যাট নিবন্ধিত। অর্থাৎ, দেশের ৮০% গয়নার দোকান কোনো ভ্যাট দেয় না।
এনবিআর চলতি বছরের শুরুতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়। এর অংশ হিসেবে ঢাকাসহ ১৮টি জেলার সব গয়নার দোকানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বা ভ্যাট মেশিন বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
২০১৯ সালের আগস্টে ঢাকায় পরীক্ষামূলকভাবে ইএফডি বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে ২০২৩ সালে এনবিআর জেনেক্স ইনফোসিসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম জোরদার করার ঘোষণা দেয়। প্রথম বছরে ৬০,০০০ ও পরবর্তী পাঁচ বছরে তিন লাখ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসানোর পরিকল্পনা থাকলেও ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মাত্র ১৬,০০০ প্রতিষ্ঠানে এটি স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।
Leave a comment