সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ে-সহ তিনজন নিহত এবং দুজন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাতে উপজেলার সলঙ্গা ও কাওয়াক মোড় এলাকায় দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে।
নিহতরা হলেন—শাহজাদপুর উপজেলার চরনবীপুর গ্রামের মৃত আবু বক্কার সিদ্দিকীর ছেলে নুরুন্নবী (৬০) এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের বহুতী গ্রামের মৃত আকবরের ছেলে আব্দুল হান্নান (৩২) ও তার তিন বছরের মেয়ে হাফসা খাতুন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন হান্নান খান। পথিমধ্যে সলঙ্গা এলাকায় পৌঁছালে একটি অজ্ঞাত ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়।
প্রচণ্ড ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় তিন বছরের শিশু হাফসা খাতুন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় হান্নান ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন, ছেলে হামজাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার আগেই হান্নান মারা যান।
আহত বৃষ্টি খাতুন ও তার ছেলে বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হান্নানের স্ত্রীর ফুফা মো. আসাদুল খান বলেন,“বৃষ্টি তার স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে নিজ বাড়ি সলঙ্গার সাতটিকরিতে যাচ্ছিল। পথে ট্রাকের ধাক্কায় হাফসা ঘটনাস্থলেই মারা যায়, হাসপাতালে নেওয়ার সময় হান্নানও মারা যায়।”
অন্যদিকে একই রাতে উল্লাপাড়ার কাওয়াক মোড় এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাকের চাপায় মারা যান নুরুন্নবী হোসেন (৬০)। তিনি শাহজাদপুর উপজেলার চরনবীপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্রাকটি জব্দ করে। তবে চালক ও সহকারী পালিয়ে যান।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, “উল্লাপাড়ায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। কাওয়াক মোড়ের ঘটনাস্থল থেকে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে, তবে চালক পালিয়ে গেছেন। দু’টি দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে।”
দেশের বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিনই দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় চার হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা।
Leave a comment