শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের ছৈয়ালকান্দি গ্রামে নিখোঁজের তিন দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে ছয় বছরের শিশু তায়েবার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার আপন চাচিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত তায়েবা স্থানীয় টিটু সরদারের মেয়ে এবং ছৈয়ালকান্দি গ্রামের দারুল নাজাত মাদরাসার নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খেলার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় তায়েবা। এরপর থেকে সে আর বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। পরে টিটু সরদার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন এবং এলাকাজুড়ে মাইকিং ও পোস্টারিং করা হয়।
কিন্তু দুদিন পর শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ির পাশের একটি সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খোলা অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। সন্দেহজনক মনে হলে সেখানে খোঁজ নিতে গিয়ে শিশুটির মরদেহ দেখতে পান তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ঘটনার তদন্তে সেদিন রাতেই পুলিশ নিহত শিশুর চাচি আয়েশা বেগম, প্রতিবেশী নাসিমা এবং আসিফ নামের এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুল হক বলেন, “শিশু তায়েবার বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলার আসামিদের মধ্যে নিহতের চাচি আয়েশা বেগমসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।”
নিহত শিশুর বাবা টিটু সরদার অভিযোগ করে বলেন, “আমার বড় ভাই সাহান সরদারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পৈতৃক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বারবার আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আমার মেয়েকেই হত্যা করা হলো। আমি আমার মেয়ের হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
স্থানীয়দের দাবি, এই হত্যাকাণ্ড কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়; বরং পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকেই তায়েবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।ঘটনার পরদিন রোববার সখিপুর বাজারে স্থানীয়রা মানববন্ধন করে। তারা শিশু হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
Leave a comment