রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক বৃদ্ধকে হত্যা করে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে রাখার মামলার প্রধান আসামি মো. তৈয়ব আলীকে সাত মাস পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৩। দীর্ঘ সময় আত্মগোপনে থাকার পর র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযানে শেষে তাকে আটক করা হয়। বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১৩ সিনিয়র সহকারী (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী।
র্যাব জানায়, নিহত সাজু মিয়া ও গ্রেপ্তারকৃত আসামি তৈয়ব আলীর মধ্যে প্রায় ছয় মাস আগে আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে বিরোধ মীমাংসা না হওয়ায় এর জের ধরেই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
গত ১৭ মে সন্ধ্যায় তৈয়ব আলী ও তার সহযোগীরা মোবাইল ফোনে সাজু মিয়াকে ডেকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে জড়িয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন ১৮ মে রাতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানা পুলিশ অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে সাজু মিয়ার পরিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে নিহতের ছেলে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসামিরা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তৈয়ব আলী ঠিকানাও পরিবর্তন করছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব। মামলাটি তদন্তে জটিল মোড় নেয় এবং আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
অবশেষে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় র্যাব-১৩ সদর কোম্পানির আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রংপুরের গঙ্গাচড়া থানার ঘাঘট নদীর তীর সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। সেখান থেকে দক্ষিণ বেতগাড়ীর শাহপাড়া গ্রামের মৃত চটকু মিয়ার ছেলে মো. তৈয়ব আলীকে আটক করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তিনি পালানোর চেষ্টা করলেও র্যাব সদস্যরা দৃঢ় কৌশলে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনেন।
র্যাব-১৩ এর মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ড। ভিকটিমকে ফুঁসলিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতার ফলেই আমরা প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
Leave a comment