Home জাতীয় অপরাধ বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ৫৬৬ নম্বর পেয়েও ফেল
অপরাধচাকরি

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ৫৬৬ নম্বর পেয়েও ফেল

Share
Share


বিসিএস পরীক্ষার ভাইভাতে অকৃতকার্য হওয়া এক পরীক্ষার্থীর নাম্বারশিট ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। ‘বিদ্যাচাষী ক্যারিয়ার’ পেজে বিশ্লেষক ও বিসিএস ক্যাডার শাকিল আল-আমিন একটি পোস্টে জানান, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় ৫৬৬ নম্বর পেয়েও ভাইভাতে ব্যর্থ হয়েছেন, যা বিস্ময় ও ক্ষোভ তৈরি করেছে বিসিএস-ভিত্তিক তরুণ সমাজে।
শাকিল আল-আমিন পোস্টে লেখেন, “৫৬৬ পেয়ে ভাইভাতে ফেল! শকড হলাম। বাংলা ও ইংরেজিতে ১৩২ করে, বিজ্ঞানে ৬৯ নম্বর, এডমিন বা ট্যাক্স ক্যাডার পাওয়ার মতো নম্বর থাকা সত্ত্বেও ভাইভাতে কেন ফেল, কেউ অনুমান করতে পারছে না।” তিনি আরো লেখেন, “এই যুগে সিরিয়াস কিছু না হলে ফেল দেওয়া উচিত না।”
এমন এক ফলাফলে প্রশ্ন উঠেছে বিসিএস-এর ভাইভা পদ্ধতি ও এর স্বচ্ছতা নিয়ে। অনেকেই মন্তব্য করছেন, একজন পরীক্ষার্থী যদি এমন উচ্চ নম্বর পেয়ে থাকে, তবে ভাইভাতে তাকে ফেল করার পেছনে যুক্তিযুক্ত কারণ থাকা দরকার এবং সেটি প্রার্থীর জ্ঞাত থাকা উচিত। কেউ কেউ সম্ভাব্য রাজনৈতিক প্রভাব, পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকা, এমনকি ভুয়া প্রার্থী হওয়ার আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করেছেন মন্তব্যে।
অন্যদিকে, অনেকেই ধারণা করছেন যে ওই পরীক্ষার্থী পূর্বের কোনো বিসিএসে কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পেয়ে গেছেন এবং এই পরীক্ষার ভাইভাতে উপস্থিত হননি, ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেল দেখানো হয়েছে। তবে এই ব্যাখ্যার পক্ষে কোনো প্রমাণ এখনো সামনে আসেনি।
সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ ব্যবহারকারীরা বিসিএস ভাইভার নম্বর কাঠামো ও এর স্বচ্ছতা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন তুলছেন। কেউ কেউ এটিকে ‘দুর্ভাগ্য’ না বলে ‘অনিয়ম’ বলছেন। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “ভাইভা মার্কসের কোনো কাঠামো নেই। এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকা দরকার।”
প্রশ্ন উঠছে, একজন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় এত ভালো করতে পারলে ভাইভাতে তার ব্যর্থতার কারণ কী? পরীক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ন্যায্যতা নিয়ে যেন নতুন করে আলোচনার দরজা খুলে দিয়েছে এই ঘটনাটি।
এখনো পর্যন্ত প্রার্থীর পরিচয়, তার অনুপস্থিতি বা অন্য কোনো প্রশাসনিক ত্রুটি সম্পর্কে কোনো সরকারি মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এই ঘটনার সূত্র ধরে বিসিএস-এর ভাইভা অংশটিকে আরও স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করার দাবি আবারো জোরালো হচ্ছে।
এ ঘটনা প্রমাণ করে, বিসিএস শুধুই মেধার নয়, বরং সেখানে এক প্রকার অজানা ভাগ্য ও পদ্ধতিগত জটিলতা কাজ করে, যা অনেক সময় অপ্রত্যাশিত ফলাফলের জন্ম দেয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যদি এ বিষয়ে দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা না দেয়, তবে এই ধরনের অভিযোগ ভবিষ্যতে বিসিএস পদ্ধতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলতে পারে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনার ছায়া, ১০ বিদ্রোহীর মৃত্যু

মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের সীমান্তবর্তী তামু জেলায় আচমকা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ১৪ মে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুলিতে বিদ্রোহী সংগঠন পা কা ফা (পিকেপি)-এর অন্তর্ভুক্ত ১০...

ধর্মপাশায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ১৫ লাইনম্যানের কর্মস্থলত্যাগ

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা উপ–আঞ্চলিক কার্যালয়ে কর্মরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১৯ জন লাইনম্যানের মধ্যে ১৫ জনই কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সাত দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় আন্দোলনে অংশ...

Related Articles

পবিত্র ঈদের দিনেও গাজায় যুদ্ধবিরতি চায় না ট্রাম্প

গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) উত্থাপিত একটি গুরুত্বপূর্ণ...

গুমের ঘটনায় প্রধান ভূমিকা পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি ও সিটিটিসির

বাংলাদেশে সংঘটিত গুমের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততার বিষয়টি...

কামরাঙ্গীরচরে স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুতে স্বামী আটক

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত স্বামীর নির্যাতনে স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ...

হবিগঞ্জে সিএনজি চালককে  পিটিয়ে হত্যা করেছে চা শ্রমিকরা

বুধবার (৪ জুন) রাত ৯টায় হবিগঞ্জ চুনারুঘাট উপজেলায় সিএনজি চালিত অটোরিকশাচালক মর্তুজ...