ঝিনাইদহে তোয়াজ উদ্দিন শেখ (৫৫) নামের এক ব্যবসায়ীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আরও রহস্য বাড়িয়েছে মরদেহের পাশে পাওয়া একটি চিরকুট, যেখানে হত্যার কারণ হিসেবে ‘ধর্ম অবমাননার অভিযোগ’ উল্লেখ করা হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত তোয়াজ উদ্দিন স্থানীয় হারিস আলী শেখের ছেলে। তিনি ওই বাড়িতে একাই বসবাস করতেন। তাঁর কোনো স্ত্রী বা সন্তান ছিল না।
প্রতিবেশী জহির বিকেলের দিকে বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে সন্দেহ করেন। পরে তিনি স্থানীয়দের বিষয়টি জানান এবং পুলিশকে খবর দেন। ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ ও সিআইডির একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, লাশটি কয়েক দিন আগেই খুন করে ফেলে রাখা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া হাতে লেখা একটি চিরকুটে বলা হয়েছে: “একে মারার কারণ—সে মুহাম্মদ (সা.) কে গালি দিয়েছে, তার নামে খারাপ কথা বলেছে। আল্লাহু আকবর।”
এ লেখাই হত্যার পেছনে ধর্মীয় কারণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে বিষয়টির সত্যতা ও হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
গ্রামে এ ঘটনাকে ঘিরে আতঙ্ক ও কৌতূহল বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, তোয়াজ উদ্দিন শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন এবং একাই বসবাস করতেন। তবে তাঁর কোনো শত্রু ছিল কিনা, কিংবা ধর্মীয় বিষয়ক কোনো বিরোধে তিনি জড়িত ছিলেন কিনা—তা নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি।
ঝিনাইদহ সদর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “মরদেহটি অর্ধগলিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পাশে চিরকুট উদ্ধার হয়েছে। তবে এটি সত্যিই হত্যাকারীর লেখা কিনা, নাকি ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা, তা তদন্তে স্পষ্ট হবে।”
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে সিআইডি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কোনোভাবে মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল সাজানো হয়েছে—সে বিষয়েও তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা বলেই মনে হচ্ছে।
তোয়াজ উদ্দিন শেখের মৃত্যু এবং চিরকুটে লেখা রহস্যজনক বার্তা নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও স্থানীয়রা দ্রুত দোষীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
Leave a comment