অসুস্থ মাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০)। কিন্তু মায়ের মৃত্যুর খবর শুনেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি এবং মুহূর্তের মধ্যে স্ট্রোক করে মারা যান। শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যার ঠিক আগে চুয়াডাঙ্গায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত চায়না খাতুন (৬৩) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়ার মৃত আলাউদ্দীনের স্ত্রী। তার ছেলে সাইফুল ইসলাম ব্যবসা করতেন। একই দিনে মা-ছেলের মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে গভীর শোক নেমে এসেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে হঠাৎ রক্তচাপ বেড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন চায়না খাতুন। বাড়ির সামনে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি। দ্রুত তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন ছেলে সাইফুল ইসলাম। হাসপাতালে মায়ের খোঁজ-খবর নেন, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে দিয়ে যান। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে মায়ের মৃত্যুর খবর আসে।
এমন খবর শুনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সাইফুল। হঠাৎ করেই তিনি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই স্ট্রোক করেন। দ্রুত তাকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা আর বাঁচাতে পারেননি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক জানান, চায়না খাতুনকে মাথায় আঘাতজনিত কারণে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। পরে হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি ঘটে এবং তিনি মারা যান।
তিনি আরও বলেন, “মায়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে তার ছেলে সাইফুল মারাত্মক মানসিক ধাক্কা পান। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি স্ট্রোক করেন। হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণ পরই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।”
একই দিনে মা ও ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে পরিবারটি। বাড়িতে চলছে আহাজারি আর শোকের মাতম। প্রতিবেশীরাও হতবাক।
স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, “এমন ঘটনা জীবনে দেখিনি। মায়ের মৃত্যুর ধাক্কা ছেলে নিতে পারেনি। একসঙ্গে মা-ছেলের জানাজা হবে—এটা ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে।”
Leave a comment