বিশ্বজুড়ে কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্য রক্ষা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও মানবসম্পদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘রিমোট’ ২০২৫ সালের জন্য বিশ্বের সেরা ওয়ার্ক–লাইফ ব্যালান্স সূচক প্রকাশ করেছে। বিশ্বের জিডিপির শীর্ষ ৬০ দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি এই তালিকায় ছুটি, মাতৃত্বকালীন সুবিধা, ন্যূনতম মজুরি, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মঘণ্টা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও জাতীয় সুখসূচকের মতো বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
তালিকার শীর্ষে আছে নিউজিল্যান্ড, যার সূচক স্কোর ৮৬.৮৭। দেশটিতে উচ্চ মজুরি, ২৬ সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং পর্যাপ্ত বার্ষিক ছুটি কর্মীদের জীবনে স্বস্তি এনে দেয়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আয়ারল্যান্ড পেয়েছে ৮১.১৭ স্কোর। বছরে ৩০ দিনের ছুটি ও নমনীয় কাজের পরিবেশ দেশটির বিশেষত্ব।
তৃতীয় স্থানে বেলজিয়াম, যেখানে সাপ্তাহিক গড় কর্মঘণ্টা মাত্র ৩৪ দশমিক ১ এবং রয়েছে শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা। চতুর্থ স্থানে থাকা জার্মানির কর্মীরা গড়ে সপ্তাহে মাত্র ৩৩ দশমিক ২ ঘণ্টা কাজ করেন, পাশাপাশি পান ৩০ দিনের বার্ষিক ছুটি।
পঞ্চম স্থানে নরওয়ে, যেখানে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, দীর্ঘ ছুটি ও স্বল্প কর্মঘণ্টা কাজের পরিবেশকে ভারসাম্যপূর্ণ করেছে। ষষ্ঠ ও সপ্তম স্থানে যথাক্রমে ডেনমার্ক ও কানাডা। উভয় দেশেই স্বাস্থ্যসেবা, অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্কৃতি ও নমনীয় কাজের সুযোগ নিশ্চিত করা হয়।
অষ্টম স্থানে অস্ট্রেলিয়া, যা উচ্চ মজুরি ও স্বস্তিদায়ক কর্মসংস্কৃতির জন্য পরিচিত। নবম স্থানে স্পেন, যেখানে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ব্যক্তিগত সময়ের গুরুত্ব এখনও টিকে আছে। দশম স্থানে ফিনল্যান্ড, যার সাফল্যের মূল ভিত্তি নমনীয় কর্মঘণ্টা ও বছরে ৩৬ দিনের ছুটির সুযোগ।
এই জরিপে প্রমাণিত হয়েছে, একটি দেশের মানসম্মত কাজের পরিবেশ শুধু মজুরি নির্ভর নয়; বরং স্বাস্থ্যসেবা, ছুটি, কর্মঘণ্টার ভারসাম্য, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও সুখী জীবনযাপনের সুযোগই দীর্ঘমেয়াদে পেশাজীবী ও ব্যক্তিজীবনের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করে।
Leave a comment