সকালের দ্বিতীয় বলেই ঘটে গেল মোড় ঘোরানো এক মুহূর্ত। ব্লেসিং মুজারাবানির বাউন্সারে লোভ সামলাতে না পেরে উইকেট ছুঁড়ে দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। এরপর যেন সব ভেঙে পড়ল। চতুর্থ দিনে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে শুরু করা বাংলাদেশ থেমে গেল মাত্র ২৫৫ রানে। ফলে জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্য দাঁড়াল মাত্র ১৭৪ রানের। যা তারা পেরিয়ে গেল ৩ উইকেট হাতে রেখেই।
এই পরাজয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে দায় নিলেন নিজ কাঁধে নাজমুল হোসেন। স্বীকার করলেন অকপটে—”ম্যাচটা আমি একা হারিয়ে দিয়েছি, সত্যি কথা। সকালে ওই আউটটাতেই পুরো খেলাটা নষ্ট হয়ে গেছে। ওখানে যদি একটা ৫০-৬০ রানের জুটি হতো, তাহলে আমরা ভালো অবস্থানে থাকতাম।”
দলের ব্যর্থতা শুধু তাঁর একার না হলেও, নেতৃত্বের ভার মাথায় নিয়ে এমন আত্মসমালোচনা সচরাচর দেখা যায় না। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬০ রান করা নাজমুলই ছিলেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরার, অথচ তাঁরই আউটে যেন কেঁপে ওঠে গোটা ব্যাটিং লাইনআপ।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে দলের সামগ্রিক ব্যাটিং পারফরম্যান্স নিয়েও। প্রথম ইনিংসে থেমে গিয়েছিল মাত্র ১৯১ রানে। দুই ইনিংস মিলিয়েই ব্যাটসম্যানদের উইকেট দেওয়ার ধরন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন নাজমুল, “সব আউটই সফট ডিসমিসাল ছিল। ভালো বলে নয়, আমরা উইকেট দিয়ে এসেছি। মেন্টাল ফেইলিওর ছিল স্পষ্ট। আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।”
ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। এমন পারফরম্যান্সের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হার আরও বেশি চেপে বসেছে দলের ওপর। সিরিজ শুরুর আগে ভালো উইকেটে খেলার যে সংকল্প ছিল, তা বাস্তবেও রূপ পেয়েছিল। কিন্তু ফল গেল উল্টো দিকে।
তবু স্পোর্টিং উইকেট নিয়ে নিজের অবস্থান থেকে সরছেন না নাজমুল, “আমার মতে এমন উইকেটে খেলাই উচিত। এটা ব্যাটসম্যান-বোলার উভয়ের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। এখন আমাদের সামনে তাকাতে হবে, পেছনে নয়।”
এই পরাজয় কেবল একটা ম্যাচের হার নয়, বরং এক নেতার দায় নেওয়ার সাহসিক উদাহরণও বটে। সামনের পথটা কঠিন, কিন্তু সৎ স্বীকারোক্তিই হতে পারে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রথম পদক্ষেপ।
Leave a comment