ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও ইসরাইলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) উপত্যকাজুড়ে নতুন করে চালানো হামলায় দুই শিশুসহ সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, মিশর সীমান্তের কাছে দক্ষিণ রাফায় তাদের টহলদলের ওপর হামাসের আকস্মিক আক্রমণে চার সেনা আহত হয়। এর পরপরই ইসরাইল একাধিক স্থানে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইসরাইলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সেনাদের ওপর হামলার “কড়া জবাব” দেওয়া হবে।
চিকিৎসকদের বরাতে আল জাজিরা জানায়—উত্তর গাজার জেইতুন এলাকায় ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে দুই ফিলিস্তিনি নিহত হন। দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি ক্যাম্পে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।আল-মাওয়াসিতে আগুনে পুড়ে যায় বেশ কয়েকটি তাঁবু। কুয়েতি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানায়, নিহত শিশুদের বয়স মাত্র আট ও দশ বছর। গুরুতর দগ্ধ আরও কয়েকজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হামাস এক বিবৃতিতে আল-মাওয়াসিতে বোমা হামলাকে “স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ” বলে মন্তব্য করে। গোষ্ঠীটি অভিযোগ করে, ইসরাইল ধারাবাহিকভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে উপেক্ষা করছে এবং সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। মধ্যস্থতাকারী মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরাইলি আগ্রাসন ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
ইসরাইল ঘোষণা করেছে, রাফাহ ক্রসিং আংশিকভাবে খোলা হবে; তবে শুধু গাজার বাসিন্দারা উপত্যকা ত্যাগ করতে পারবেন। ত্রাণ বা মানবিক সহায়তা ঢুকতে পারবে না। মিশর এই সিদ্ধান্তকে “একতরফা ও মার্কিন শান্তি পরিকল্পনার পরিপন্থি” হিসেবে আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে উভয় দিকেই চলাচল স্বাভাবিক করার কথা ছিল। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে আরও এক ইসরাইলি জিম্মির মরদেহ রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস। গাজার স্থানীয় প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইল অন্তত ৫৯১ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এসব হামলায় এ পর্যন্ত ৩৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯২২ জন আহত হয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা
Leave a comment