পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুন হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই পেশাদার শুটারকে শনাক্তের পর তাদের গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতার দুইজন হলেন—রুবেল ও ইব্রাহিম, যারা দীর্ঘদিন ধরে পেশাদার ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হত্যার পর তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ টিম তাদের গ্রেফতার করে। এর একদিন আগে, সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে পুরান ঢাকার সূত্রাপুর এলাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ শুটারদের পরিচয় শনাক্ত করে। মামুনের স্বজনরা জানান, সেদিন তিনি একটি পুরোনো মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে রাজধানীর আফতাবনগরের বাসায় ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন।দুই বছর আগেও রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় তার ওপর একবার হামলার চেষ্টা চালানো হয়েছিল, কিন্তু সেবার প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
পুলিশ জানায়, নিহত তারিক সাইফ মামুন ছিলেন কুখ্যাত ‘ইমন-মামুন’ গ্রুপের অন্যতম নেতা। একসময় তিনি আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে ইমন ও মামুনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই পুরনো দ্বন্দ্বই মামুন হত্যার মূল কারণ হতে পারে।
ডিবি পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, হত্যার পরপরই রুবেল ও ইব্রাহিম ঢাকার বাইরে পালিয়ে যায় এবং সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নেয়।তারা ভারতে পালানোর জন্য দালালের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের বিশেষ টিম মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে তাদের কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, মোবাইলের তথ্য বিশ্লেষণ করে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদেরও শনাক্ত করা যাবে। এই হত্যাকাণ্ডের পর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর, লালবাগ ও চকবাজার এলাকায় পুলিশ টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ডিএমপি জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সক্রিয় নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে ইতিমধ্যে একাধিক এলাকায় অভিযান চলছে।
Leave a comment