মধ্যপ্রাচ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মধ্যে নতুন মোড় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ঘোষণা করেছে, তারা মার্কিন প্রস্তাব আংশিকভাবে গ্রহণ করতে রাজি। তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নিয়ে আরও আলোচনার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বন্দিবিনিময়ের প্রক্রিয়ায় তারা সম্মত এবং জীবিত ও মৃত—দুই ধরনের জিম্মিকেই মুক্তি দিতে রাজি। তবে এ প্রক্রিয়া কার্যকর করতে হলে মাঠ পর্যায়ের বাস্তব শর্ত মানতে হবে। বর্তমানে গাজায় ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মি আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যার মধ্যে ২০ জন জীবিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শুক্রবার আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হামাসকে প্রস্তাবে সম্মতি জানাতে হবে। অন্যথায়, তাঁর ভাষায়, হামাসকে ভোগ করতে হবে ‘নরক যন্ত্রণা’। এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হামাস আংশিকভাবে সম্মতির কথা জানায়।
হোয়াইট হাউসের ২০ দফার প্রস্তাবে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২০ জীবিত জিম্মির মুক্তি এবং মৃতদের দেহাবশেষ ফেরত দেওয়ার শর্ত রয়েছে। বিনিময়ে ইসরায়েলের হাতে আটক শত শত গাজাবাসীকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, গাজার ভবিষ্যৎ শাসনে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
এ প্রস্তাবে হামাস জানায়, তারা গাজার প্রশাসন একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট সরকারকে হস্তান্তর করতে প্রস্তুত। এ সরকার জাতীয় ঐকমত্য ও আরব-ইসলামি বিশ্বের সমর্থনের ভিত্তিতে গঠিত হবে। তবে সংগঠনটি গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা ও ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছে।
প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইতিবাচক সাড়া দিলেও ভিডিও বার্তায় পুনরায় জানিয়েছেন, তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধী। তাঁর দাবি, পরিকল্পনায় কোথাও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের কথা উল্লেখ নেই, এবং ইসরায়েল তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
ওদিকে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট বলেছেন, হামাসের হাতে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগোনোর সুযোগ এসেছে। তবে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে এর পরিণতি হবে ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’।
গাজা নগরী ইতিমধ্যেই ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতবিক্ষত। এ অবস্থায় শান্তি পরিকল্পনা আংশিকভাবে মেনে নেওয়া হলেও, আঞ্চলিক উত্তেজনা কমবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Leave a comment