মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়েও শেষবারের মতো মুখ দেখা হবে কিনা, সেই অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন বাংলাদেশে বসবাসরত এক মেয়ে। তবে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ও বিএসএফের (ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী) মানবিক সহযোগিতায় পূর্ণ হলো সেই আকুতি। বিজিবি’র উদ্যোগে সীমান্তের শূন্যরেখায় মায়ের মরদেহ এনে শেষবারের মতো মুখ দেখার সুযোগ পেলেন তিনি।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হৃদয়পুর গ্রামের বাসিন্দা জাহানারা বেগম (৬৫) দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে রেখে যান। তার এক মেয়ে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার আনন্দবাস গ্রামে।
মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তিনি শেষবারের মতো মুখ দেখার আকুতি জানান। বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি)-কে জানানো হলে তারা দ্রুত বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
সমন্বিত প্রচেষ্টায় শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে সীমান্তের মেইন পিলার ১০৫-এর কাছে শূন্যরেখায় জাহানারা বেগমের মরদেহ আনা হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত মেয়েকে তার মায়ের মরদেহ দেখার সুযোগ দেওয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি)-এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, “এই ধরনের মানবিক কার্যক্রম শুধু দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করে না, বরং সীমান্তবর্তী সাধারণ মানুষের মধ্যেও আস্থা তৈরি করে। বিজিবি সবসময় ‘সীমান্তের নিরাপত্তা এবং আস্থার প্রতীক’ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।”
স্থানীয়রা বলেন, এ ঘটনা শুধু পরিবারের জন্য নয়, বরং সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত অসংখ্য মানুষের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। কারণ সীমান্তে নিরাপত্তা ইস্যুতে যেখানে কঠোর অবস্থান দেখা যায়, সেখানে মানবিকতা এমনভাবে জায়গা করে নেওয়া সত্যিই ব্যতিক্রম।
Leave a comment