সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধকরণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন, যা গ্রহণ করা হয়েছে বলে দেশটির প্রশাসন নিশ্চিত করেছে।
প্রেসিডেন্ট বরাবর জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে ওলি লিখেছেন— “মাননীয় প্রেসিডেন্ট, নেপালের সংবিধানের ৭৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। তাই সংবিধানের ৭৭ (১)(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে আমি আজ (৯ সেপ্টেম্বর) থেকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি।”
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামসহ ২৬টি সামাজিক মাধ্যম বন্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের পর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও আন্দোলন দ্রুত সহিংস রূপ নেয়।
রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে কারফিউ জারি করা হয় পুরো রাজধানীতে।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। নিরাপত্তার স্বার্থে নেপাল সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারে মন্ত্রীদের সরিয়ে নিতে শুরু করে।
টানা দুই দিনের সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকে। হতাহতের দায় নিয়ে পদত্যাগ করেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ওলি-ও চাপের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হলেন।
Leave a comment