মাওয়া-লৌহজং সড়কের পাশে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একটি প্লাস্টিক কারখানাসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মাওয়া-লৌহজং সড়কের পাশে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
পুড়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে—সুমন ঢালীর একটি ফলের ও চায়ের দোকান, আরিফ ঢালীর একটি সেলুন, একটি প্লাস্টিক কারখানা, একটি লোহার স্ক্র্যাব কারখানা এবং নাসির খানের একটি ওয়ার্কশপ। ব্যবসায়ীদের দাবি, এ দুর্ঘটনায় তাদের সম্মিলিত ক্ষতি প্রায় এক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনসহ লৌহজংয়ের মোট চারটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ঘণ্টাব্যাপী তৎপরতার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে ততক্ষণে প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন বলেন, “আমরা লৌহজং ও শ্রীনগরের চারটি ইউনিট নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করেছি। আগুনের তীব্রতা খুব বেশি ছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।”
আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত না হলেও প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, এক মুহূর্তেই তাদের জীবিকা ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেকে দোকান সাজানোর জন্য সম্প্রতি নতুন পণ্য তুলেছিলেন, যা মুহূর্তেই ছাই হয়ে যায়। ব্যবসায়ী নাসির খান বলেন, “আমার ওয়ার্কশপে লাখ টাকার যন্ত্রপাতি ছিল। একটিও আর রইলো না। এখন কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবো, বুঝতে পারছি না।”
একই হতাশার সুর শোনা যায় ফল ব্যবসায়ী সুমন ঢালীর কণ্ঠেও। তিনি বলেন, “দিন-রাত পরিশ্রম করে দোকান সাজিয়েছিলাম। কিন্তু কয়েক মিনিটেই সব শেষ হয়ে গেল।” অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছান লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদান করেন।
প্রতিষ্ঠানপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়—যার মধ্যে ১০ হাজার টাকা সরকারের পক্ষ থেকে এবং বাকি ১০ হাজার টাকা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়।
ইউএনও নেছার উদ্দিন বলেন, “প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে অর্থ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।”মুন্সীগঞ্জের এই অগ্নিকাণ্ড আবারও তুলে ধরেছে স্থানীয় ব্যবসায়িক এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসনের তাৎক্ষণিক সহযোগিতা কিছুটা স্বস্তি দিলেও ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, টিকে থাকার জন্য আরও বড় সহায়তা প্রয়োজন
Leave a comment