চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যে, প্রকল্পের ফাইল বাসায় নিয়ে যাওয়ার কারণে প্রকল্পের স্বাক্ষর এবং বাস্তবায়ন ব্যাহত হচ্ছে।
মেয়র এই মন্তব্য করেছেন সোমবার নগরীর জামালখানায় চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত ‘পরিচ্ছন্নতা সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান’ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
ডা. শাহাদাত বলেন, “আমাদের তিনটি প্রজেক্ট এখনও এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ে আছে। উপদেষ্টা যখন দেখেন এটি একটি প্রকল্প, তিনি ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে রাখেন না, বাসায় নিয়ে যান। ফাইল আছে, কিন্তু মিনিস্ট্রিতে আর পাওয়া যায় না। বাসা থেকে ফাইলের স্বাক্ষর হয় না। এর ফলে ইউকের প্রকল্প, জাপান এবং কোরিয়ার প্রজেক্টগুলো আমি করতে পারিনি। এ শুধু চট্টগ্রাম সিটির নয়, রাষ্ট্রেরও ব্যর্থতা।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম সিটির চারশ কোটি টাকার প্রকল্প ফিন্যান্স মিনিস্ট্রিতে গিয়ে কমে হয়ে গেছে ২৯৮ কোটি টাকায়। “আমাদের ১৬০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে ৫ শতাংশ সুদে, কিন্তু ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বাকিটা সিটি করপোরেশন থেকে দিতে হবে।
মেয়র বলেন, “আমার যন্ত্রপাতি অনেক পুরোনো। একটি ড্রেনেজ প্রকল্পে ১৪ হাজার কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে। যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু স্বাক্ষর না হওয়ায় কাজ ব্যাহত হয়েছে। আমি ফেল করিনি, রাষ্ট্র ফেল করেছে।”
প্রধান অতিথি ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, “আমরা সব মিনিস্ট্রি ও ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রির সঙ্গে মারামারি করি। বাজেট না পেলে আমরা উদ্যোগ নেই। যেটুকু বাজেট পাওয়া গেছে, সেটুকু মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে গ্রহণ করুন এবং চট্টগ্রামের মানুষকে বঞ্চিত না করে কাজ শুরু করুন।”
২০১৬ সালে চসিকের তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুরূপ অভিযোগ করেছিলেন। তখনও বরাদ্দের অংশ না পাওয়ায় তিনি অর্থ সংকটে ভুগেছিলেন।
চসিকের বর্তমান মেয়রের অভিযোগে পুনরায় প্রকাশ পাচ্ছে যে, স্থানীয় সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নে উপদেষ্টাদের আচরণ ও প্রশাসনিক তদারকির অভাব কাজের গতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
Leave a comment