নয়াদিল্লির ক্ষমতার করিডরে নরেন্দ্র মোদির ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা এখন তুঙ্গে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা মোদি সম্প্রতি এক ভাষণে ‘ব্যক্তিগতভাবে চড়া মূল্য চোকানোর’ ইঙ্গিত দেওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি ও শুল্ক সংকট, বিশেষত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, ভারতের অভ্যন্তরীণ কৃষি ও পশুপালন খাতকে ঘিরে তীব্র চাপ তৈরি করেছে। এই অবস্থায় মোদি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কৃষক ও মৎস্যজীবীদের স্বার্থহানি তিনি মেনে নেবেন না, যদিও এর জন্য রাজনৈতিক মূল্য দিতে হয়।
বহিরাগত চাপের পাশাপাশি বিজেপির ভেতরেও বিরোধ বাড়ছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) মোদি–শাহ জুটির প্রভাব কমাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ৭৫ বছর বয়সসীমা নিয়ে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের ইঙ্গিতও মোদির ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের আকস্মিক পদত্যাগ, জাট নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি, এবং দলীয় মুখপাত্রদের পদত্যাগ বা বহিষ্কার—সব মিলিয়ে বিজেপির ভিত নড়বড়ে হয়ে উঠছে।
বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটও এখন আগের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ। নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে তারা রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে বিহারে ‘মতদাতা অধিকার যাত্রা’ শুরু হতে যাচ্ছে, যা আগামী নির্বাচনের আগে বিরোধীদের শক্তি প্রদর্শনের বড় মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে।
আসন্ন বিহার নির্বাচন, মার্কিন শুল্কনীতি, আর মোদির বয়সসীমা বিতর্ক—সবকিছু মিলে ভারতের রাজনীতিতে এক অনিশ্চিত ও টালমাটাল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। অনেকের মতে, মোদি এখন তাঁর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি।
Leave a comment