বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ও আলোড়ন তোলা রিজার্ভ চুরির ঘটনায় নতুন অগ্রগতি জানাল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংস্থাটির পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দিন খান জানিয়েছেন, ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) মাধ্যমে পাচার হওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার আদালতের আদেশে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়ার পর এই অর্থ বাজেয়াপ্ত হয়েছে এবং আজ দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রায় ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। সাইবার হামলার মাধ্যমে চুরি হওয়া এ অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরত আসে মাত্র ২ কোটি ডলার। বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে ফিলিপাইনের বিভিন্ন ক্যাসিনোয় প্রবাহিত হয়। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তীব্র আলোচনার জন্ম দেয় এবং বাংলাদেশের আর্থিক খাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পায়।
চুরির ঘটনার পর থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা আন্তর্জাতিকভাবে অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়। ফিলিপাইনের আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় প্রায় সাড়ে আট বছর ধরে চলা দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে বাজেয়াপ্ত হলো এই বিপুল অর্থ। তবে এখনও অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি; বাজেয়াপ্ত অর্থ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন বহুবার পিছিয়েছে। সর্বশেষ আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে আদালত। এদিকে, আরসিবিসির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাও এখনও চলমান। বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় এই আর্থিক অপরাধের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত অর্থ ফেরত আনা নিয়েই এখন সবার দৃষ্টি।

Leave a comment