চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে বৃদ্ধ এক যাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা রেলস্টেশন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় জনতা। পরে অভিযুক্ত রেলওয়ে কর্মচারীকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধের নাম ফুল মিয়া, যিনি কসবার সায়েদাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি আসনবিহীন টিকিট কেটে মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের পাওয়ার কার বগিতে উঠেছিলেন। পথিমধ্যে ফেনী স্টেশনে পৌঁছালে ট্রেনের পাওয়ার কার অপারেটর কাউসার মিয়া তাঁর কাছে টিকিট দেখতে চান। ফুল মিয়া আসনবিহীন টিকিট দেখালে, কাউসার অতিরিক্ত ২০০ টাকা দাবি করেন। বৃদ্ধ এই দাবি অস্বীকার করলে, কাউসার ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধর করেন।
ট্রেনে থাকা আরেক যাত্রী মারধরের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। ভিডিওটি মুহূর্তের মধ্যেই ‘উপকূল ট্রেন’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কসবার স্থানীয় বাসিন্দারা, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীরা বিকেল ৩টা থেকে কসবা রেলস্টেশনে জড়ো হতে থাকেন।
বিকেল ৪টার দিকে বিক্ষোভকারীরা স্টেশন অবরোধ করলে, মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি কসবার আগের স্টেশন মন্দবাগে থামিয়ে রাখা হয়। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাসদস্যরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিকেল ৫টার দিকে ট্রেন কসবা স্টেশনে এলে, নিরাপত্তাকর্মীরা অভিযুক্ত কাউসার মিয়াকে আটক করে বৃদ্ধ ফুল মিয়ার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন। পরে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার ঘোষণা দিলে, বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন এবং ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ছামিউল ইসলাম বলেন, ‘ট্রেনের কর্মচারীর অসদাচরণের ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেশনে জড়ো হন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
কসবা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ‘জনতার চাপের মুখে অভিযুক্ত কর্মচারীকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।’
এই ঘটনায় রেলওয়ের যাত্রীসেবার মান ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যাত্রীরা দাবি করছেন, ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
Leave a comment