আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির অনন্য নিদর্শন সূর্য ও চন্দ্র। সময়ের আবর্তে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ ঘটে, যা মূলত মহান রবের কুদরতের প্রকাশ। ইসলাম এ বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে।
চন্দ্রগ্রহণ কী?
চন্দ্রগ্রহণকে আরবিতে বলা হয় খুসুফ। চাঁদ তার কক্ষপথে চলতে গিয়ে পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে গেলে তা গ্রহণ হিসেবে দৃশ্যমান হয়। কখনো আংশিক, কখনো পূর্ণরূপে চাঁদের আলো ঢাকা পড়ে যায়।
কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন— “যখন দৃষ্টি চমকে যাবে, চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে পড়বে এবং সূর্য ও চন্দ্র একত্রিত হবে।”
(সূরা কিয়ামাহ: ৭-৯)
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর শিক্ষা-
জাহেলি যুগে ধারণা ছিল, কোনো বড় মানুষের মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ ঘটে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.) এ কুসংস্কার ভেঙে দেন।
তিনি বলেন— “সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে এদের গ্রহণ হয় না। তাই তোমরা যখন তা দেখবে, তখন দোয়া করবে, তাকবির বলবে, নামাজ পড়বে এবং দান-সদকা করবে।”
(বুখারি ও মুসলিম)
করণীয় আমল:
চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণের সময় মুসলমানদের জন্য করণীয় হলো—
(.) বেশি বেশি দোয়া করা।
(.) তাকবির বলা (আল্লাহু আকবার)।
(.) নামাজ পড়া।
(.) সাদকা বা দান করা।
(.) তাওবা-ইসতেগফার করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
কুসংস্কার থেকে সতর্কতা:
সমাজে এ নিয়ে নানা ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত, যেমন—
• গ্রহণের সময় খাবার খাওয়া নিষেধ।
• গর্ভবতী নারীর কোনো কাজ করলে সন্তানের ক্ষতি হয়।
• গ্রহণের সময় জন্ম নেয়া শিশু অসুস্থ বা বিশেষ কিছু হবে।
এসব ধারণার কোনো ভিত্তি ইসলামে নেই। এগুলো নিছক কুসংস্কার এবং এতে বিশ্বাস করা ঈমানের জন্য ক্ষতিকর।
চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ আল্লাহর নিদর্শন। এটি কোনো অশুভ ঘটনা নয়, বরং বান্দাদের জন্য শিক্ষা ও সতর্কবার্তা। তাই মুসলমানদের উচিত এ সময় হাদিসে বর্ণিত আমলগুলো পালন করা এবং কুসংস্কার থেকে বিরত থাকা।
Leave a comment