যুক্তরাজ্যে কঠোর অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ নীতি কার্যকর হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজারো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেশটিতে অবস্থানকারীদের সরাসরি টেক্সট বার্তা ও ইমেইল পাঠিয়ে দ্রুত দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় জোরপূর্বক বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বার্তায় স্পষ্ট জানানো হয়েছে—‘যদি আপনার যুক্তরাজ্যে থাকার আইনি অধিকার না থাকে, তবে আপনাকে অবশ্যই এই দেশ ছেড়ে যেতে হবে। অন্যথায় আপনাকে অপসারণ করা হবে।’ এছাড়া ভিত্তিহীন রাজনৈতিক আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) চেষ্টাগুলো কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করার কথাও উল্লেখ রয়েছে।
সরকারের অবস্থান-
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, সেপ্টেম্বর থেকেই ‘চ্যানেল অভিবাসীদের’ ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। একই সঙ্গে শরণার্থীদের পারিবারিক পুনর্মিলন আবেদন গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিশেষ বিমানে করে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা-
হঠাৎ এমন কড়াকড়িতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। অনেকেই বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে এবং পরিবারকে ছেড়ে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন। এখন সেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ও সমাজে তাদের অবদানকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।
বাংলাদেশি অভিভাবকদের উদ্বেগও বাড়ছে। যেসব বাবা-মা সন্তানদের পড়াশোনার জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন, তারা এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
বিশেষজ্ঞের মতামত-
লন্ডনপ্রবাসী ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দীন সুমন বলেন, “এই অনিশ্চয়তা বাংলাদেশের হাজারো শিক্ষার্থীর ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। অভিবাসন নীতির কড়াকড়ির পর থেকেই বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন কমেছে। গ্র্যাজুয়েট ভিসায় কাজ করে স্থায়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখা শিক্ষার্থীদের আশা এখন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।”
বিকল্প ভাবনায় শিক্ষার্থীরা-
জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের কঠোর অবস্থানের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার বিকল্প হিসেবে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছেন।
Leave a comment