ভিয়েতনামে কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ ও ভূমিধসের কারণে দেশজুড়ে ভয়ঙ্কর তাণ্ডব দেখা দিয়েছে। সরকারি এবং স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, এই বিপর্যয়ে অন্তত ৯০ জন নিহত এবং আরও ১২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সকল অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি, আর ৩০ লাখেরও বেশি গবাদি পশু পানিতে ভেসে গেছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশ’ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি হতে পারে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হলো পাহাড়ি জেলা ডাকলাক। এখানে ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের ফলে প্রায় ৬০টির বেশি মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে। এছাড়াও কোয়াং নগাই, জিয়া লাই, খান হোয়া এবং লাম ডং প্রদেশগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোববার (২৩ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন ছিলেন। প্রধান মহাসড়ক ও রেলপথের অনেক অংশ বন্ধ থাকায় যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে।
ডাকলাকের এক কৃষক, মাচ ভান সি বলেন, “আমাদের গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। কিছুই বাঁচেনি। সবকিছু মাটির নিচে ঢেকে গেছে।” সরকারি সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে; সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জরুরি বৈঠক পরিচালনা করেছেন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছু এলাকায় ১.৫ মিটার (প্রায় ৫ ফুট) এবং কিছু অঞ্চলে ৫.২ মিটার অতিক্রম করেছে।
সরকারি ও আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা আরও বড় বিপর্যয় এড়াতে জরুরি পদক্ষেপ, প্রস্তুতি ও দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু-সমন্বিত পরিকল্পনার গুরুত্বের দিকে গুরুত্বারোপ করছেন।
ভিয়েতনামের এই বিপর্যয় একটি সতর্কবার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশকেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রস্তুতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।
Leave a comment