সুন্দরবনের পশুর নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ থাকা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নারী পর্যটক রিয়ানা আবজাল (২৮)-এর মরদেহ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে বাগেরহাটের মোংলার সাইলো জেটি সংলগ্ন নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক গণমাধ্যমকে জানান, সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে নদীতে এক নারীর মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। খবর পেয়ে কোস্ট গার্ডের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ চাঁদপাই নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত রিয়ানা আবজাল রাজধানীর উত্তরা এলাকার আবুল কালাম আজাদের মেয়ে। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তিনি পেশায় একজন পাইলট ছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন।
এর আগে শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে সুন্দরবনের ঢাংমারী ও পশুর নদীর মোহনায় পর্যটকবাহী একটি ট্রলার উল্টে গেলে রিয়ানা নিখোঁজ হন। ওই সময় তার পরিবারের সদস্যসহ মোট ১৩ জন পর্যটক ট্রলারে ছিলেন। দুর্ঘটনার পর কোস্ট গার্ড, বনবিভাগ ও স্থানীয় জেলেরা যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালান। নিখোঁজের পর থেকে রিয়ানার সন্ধানে নদীতে টানা দুই দিন তল্লাশি চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকার উত্তরা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন রিয়ানা আবজাল। শনিবার দুপুরে ট্রলারটি পশুর নদীর ঢাংমারী এলাকায় প্রবল ঢেউয়ের মুখে পড়ে। চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রলারটি উল্টে যায়। অন্যান্য পর্যটকরা কোনওভাবে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও রিয়ানা পানিতে তলিয়ে যান।
কোস্ট গার্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, “টানা দুই দিন অনুসন্ধান চালানোর পর অবশেষে আজ সকালে সাইলো জেটি সংলগ্ন স্থানে তার মরদেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্রোতের টানে মরদেহটি সেখানে ভেসে এসেছে।”
মরদেহ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনাটি পর্যটন নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি ও নদীপথে যাত্রী পরিবহনের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, সুন্দরবন ভ্রমণের ক্ষেত্রে নৌযানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
Leave a comment