বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রী ও ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় নিহত ইমরান হোসেনের মামা জয়পুরহাটের জিশানকে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন, প্রবাসী ইদ্রিস আলীর স্ত্রী রানী বেগম (৪০) এবং তাদের ছেলে ইমরান হোসেন (১৮)। গত ১৫ সেপ্টেম্বর (সোমবার) দিনগত রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাদুল্লাপুর বটতলা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় নিহত রানী বেগমের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইমরানের মোটরসাইকেল ও বাড়িতে থাকা স্বর্ণালংকার ও টাকার প্রতি লোভ থেকেই পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঘটনার দিন রাতে ইমরানের মামা জিশানসহ আরও তিনজন বাড়িতে প্রবেশ করেন।
প্রথমে তারা অতিথি সেজে রাত কাটানোর কথা বলেন। পরে সুযোগ বুঝে ইমরানের মোটরসাইকেলের চাবি ও কাগজপত্র নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে ইমরান বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা তাকে মোবাইল চার্জারের তার দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয়।
চিৎকার শুনে বারান্দায় আসা মা রানী বেগমকেও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে কুপিয়ে হত্যা করে তারা। হত্যার পর দুর্বৃত্তরা ইমরানের স্বজন হাসানকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। পরে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা থেকে পুলিশ তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। জানা যায়, তাকে ইনজেকশন প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে রেখেছিল তারা।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হাসান পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মামলার মূল রহস্য উন্মোচিত হয়। পুলিশ ইতোমধ্যেই এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে। তবে বাকি তিনজন এখনও পলাতক।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুজ্জামান বলেন, “জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।”
এলাকাবাসী এ হত্যাকাণ্ডে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, মামার মতো আপনজন যখন খুনের নেপথ্যে থাকে, তখন তা সমাজের জন্য ভয়াবহ সংকেত। দ্রুত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।
Leave a comment