চলতি বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নাটকীয়ভাবে কমিয়ে এনেছে সরকার—গতবারের ৬ লাখ টনের বদলে এবার সংগ্রহ করা হবে মাত্র সাড়ে ৩ লাখ টন। সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের ৪৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁদের অভিযোগ—এই সিদ্ধান্তে কৃষক বঞ্চিত হবেন, আর সুবিধা পাবেন চালকলমালিকেরা।
বিবৃতিদাতারা বলেন, সরকার চালকল মালিকদের কাছ থেকে চাল কিনলে কৃষকের হাতে তেমন কিছু যায় না। বরং লাভটা চলে যায় মিলারদের পকেটে। অথচ যদি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হতো, তাহলে বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ত।
তাঁরা আরও জানান, ধান–চাল ছাড়া অন্য কোনো শস্য সরকার কিনে না, আর ধানের দাম নির্ধারণেও আছে স্বচ্ছতার অভাব। ফলে কৃষক বছরের পর বছর প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, ধান সংগ্রহ কমানোর পেছনে আছে বাস্তব কারণ—দেশে পর্যাপ্ত চাল আমদানি হয়েছে, আর ধান ভাঙানো ও মজুদ করার সক্ষমতায় আছে ঘাটতি।
তবুও নাগরিকদের দাবি, এই যুক্তি টেকসই নয়। বরং চুক্তিভিত্তিক চালকলগুলোকে ব্যবহার করেই ধান ভাঙানো সম্ভব। এতে গুদামসক্ষমতা বাড়ানো ছাড়াই সংগ্রহ বাড়ানো যাবে। এ ছাড়া তাঁরা আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলেছেন:
১. ধান সংগ্রহের লক্ষ্য ৩.৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১৭ লাখ টন করতে হবে
২. চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ১৪.৫ লাখ থেকে কমিয়ে ৫ লাখ টন করা উচিত
৩. কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে ৫০ লাখ টনে নিতে হবে
৪. সরকারি গুদামের ক্ষমতা ২১ লাখ টন থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টন করতে হবে
তাঁদের প্রস্তাবে রয়েছে আরও বাস্তবভিত্তিক কিছু দাবি—যেমন গ্রাম ও ইউনিয়নভিত্তিক সংরক্ষণাগার স্থাপন, পাহাড়ি এলাকার কৃষকদের ফসল ন্যায্যমূল্যে কেনা, এবং স্থানীয় মূল্য নির্ধারণ কমিটিতে কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
Leave a comment