দীর্ঘ দুই বছর স্থিতিশীলতার অভাবে নাজেহাল ছিল দেশের ডলার বাজার। মাঝখানে সামান্য স্থিতিশীলতা ফিরে এলেও আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে মার্কিন মুদ্রার বিনিময় মূল্যে। সরকারের সাম্প্রতিক ঘোষণা ডলারের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার পর খোলাবাজারে অস্থিরতা আরও তীব্র হয়েছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে, ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যে রাখতে। একই সঙ্গে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ডলারের জন্য একই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নিয়ম ভাঙলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে।
১২ জানুয়ারি থেকে ডলারের ভিত্তিমূল্য দিনে দুইবার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে অর্থনীতিবিদদের অনেকেই মনে
২০২২ সালের মার্চ থেকে ডলারের দাম দ্রুত বাড়তে থাকে। ২০২২ সালের ৩০ মার্চ ডলারের অফিশিয়াল মূল্য ছিল ৮৬.২০ টাকা, যা এখন দাঁড়িয়েছে ১২৩ টাকায়। ৩৩ মাসে মূল্য বেড়েছে প্রায় ৪৩ শতাংশ। তবে অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংকগুলো আমদানির দায় মেটাতে ১২৩ টাকার চেয়েও বেশি দামে ডলার কিনছে।
এভাবে ডলারের দাম বাড়তে থাকলে আমদানি নির্ভর শিল্পের খরচ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে স্থানীয় উৎপাদন, কাঁচামাল সরবরাহ, এবং রপ্তানিমুখী শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিন ডলার লেনদেনের তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়া, বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অনুমোদিত শাখাগুলোকে গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ডলারের দাম নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে প্রতিদিনের ডলারের ভিত্তিমূল্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব পদক্ষেপও ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট নয়।
ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে এর মূল্য আরও বাড়তে পারে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে স্থানীয় শিল্পে, যা বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
Leave a comment