সম্প্রীতি ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমি খুবই ভাগ্যবান। সেদিন হয়তো আমার বেঁচে থাকারই কথা ছিল না। আমার নিজের বাসা ছেড়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিই। চারদিক থেকে মিছিল আসছিল। হঠাৎ করে তা সংসদ এলাকা ঘিরে ফেলে। শুরু হয় লুটপাট।
ওবায়দুল কাদের বলেন , যে বাসায় ছিলাম সেখানেও হামলা হয়। তারা জানত না আমি সেখানে আছি। আমি স্ত্রীসহ বাথরুমে লুকাই। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বাথরুমে অবস্থান করি। একসময় তারা বাথরুমে ঢুকতে চায়। আমার স্ত্রী বারবার বলেন আমি অসুস্থ। পরে বাধ্য হয়ে দরজা খুলে দিই।
তারপর ৭/৮ জন ছেলে ঢুকলো খুবই আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি, মনোভঙ্গি নিয়ে। তখন হঠাৎ তারা আমার দিকে তাকায়। ‘নেত্রী চলে গেলেও আপনি যাননি কেন’— এমন কিছু বলছিলো। তারপর এই ছেলেদের মধ্যে কী ভাবের উদয় হয়েছে জানিনা, তারা আমাকে বলে ‘আপনার ছবি তুলবো’। তারা আমার ছবি তোলা শুরু করে, সেলফি নিচ্ছিলো। এরাও ছাত্র, অনেকে আমাকে চেনে। তখন তাদের আক্রমণাত্মক মনোভাব নিমেষেই শীতল হয়ে গেল। তারা ঠান্ডা মাথায় তখন কথা বলছিলো।”
তিনি আরও বলেন, “এদের মধ্যেই একটা গ্রুপ চেয়েছিলো আমাকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে। কেউ কেউ আবার চেয়েছিলো জনতার হাতে তুলে দিতে। এটা অবশ্যই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা ছিল ।
পরে তারা আমার মুখে কালো একটা মাস্ক দিয়ে, আমাকে সংসদ এলাকা থেকে হাঁটতে হাঁটতে বড় রাস্তা অভিমুখে নিয়ে যায়। হঠাৎ করে কোথা থেকে একটা ট্যাক্সি, ইজিবাইক আসে। সেটা খালিই ছিল। ওখানে কোনো গাড়ি-ঘোড়া কিছুই ছিল না। হঠাৎ করে কেন জানি এসে পড়লো— হয়তো আমার ভাগ্য।
আমাকে দুইজনে নিয়ে অটোতে উঠলো আর বলতে লাগলো, আমাদের চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিচ্ছি, ডিস্টার্ব করবেন না। এই করে নিয়ে গেল অনেক দূরের একটা জায়গায়। ওবায়দুল কাদের বলেন, সেই সময় আমরা ভাবতেও পারিনি যে বেঁচে থাকবো
Leave a comment