লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের দাবি। তবে এই পরিকল্পনা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না বলে দৃঢ় দাবি করেছেন সংগঠনটির উপ-মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম। তিনি বলেছেন, হিজবুল্লাহ লেবাননের জাতীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গঠিত প্রতিরোধশক্তি; তাই কোনো বিদেশি চাপেই তারা আত্মসমর্পণ করবে না।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সংগঠনের নিহত আলেমদের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যসূত্র: মেহের নিউজ।
অনুষ্ঠানে নাঈম কাসেম বলেন, বছরের পর বছর ধরে হিজবুল্লাহ এমনভাবে শক্তিশালী হয়েছে যে বিশ্বের অনেক দেশই তাদের বিকাশ দেখে বিস্মিত। তার দাবি, শত্রুপক্ষ বহুবার সংগঠনটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে, কারণ হিজবুল্লাহ লেবাননের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও দেশপ্রেমের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, “নিহত আলেমদের রক্ত আমাদের জীবনের আলো, আর তাদের কলমের কালি আমাদের পথ দেখায়। হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ ও অগ্রযাত্রা তাদের আত্মত্যাগের ফল।”
ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘সম্প্রসারণবাদী আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লেবাননের নিরাপত্তা রক্ষায় সব ধরনের উপায় গ্রহণ করা এখন অত্যন্ত জরুরি। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের লেবাননের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার নেই।
তিনি দৃঢ় সুরে বলেন, “হিজবুল্লাহ নিজেকে, জনগণকে এবং দেশকে রক্ষার জন্য সবসময় প্রস্তুত। আমরা কখনোই হার মানব না।”
সংগঠনটির রাজনৈতিক ভূমিকা প্রসঙ্গে নাঈম কাসেম জানান, হিজবুল্লাহ লেবানন পুনর্গঠন ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য যেকোনো রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, ২০০৬ সালের যুদ্ধে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক লেবাননের জাতীয় ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করেছিল।
সম্প্রতি পোপের উদ্দেশে পাঠানো এক শুভেচ্ছাবার্তা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনারও জবাব দেন তিনি। হিজবুল্লাহ প্রধানের ভাষায়, “হিজবুল্লাহ কারো স্বীকৃতি চায় না। আমাদের গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণ করার অধিকার কারোর নেই।”
বক্তব্যের শেষে লেবানন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের প্রতিরক্ষায় হিজবুল্লাহ নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে। এখন জাতীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়ার পালা সরকারের।
নাঈম কাসেম অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেকেই হিজবুল্লাহকে দুর্নাম ছড়ানোর চেষ্টা করছে, কারণ সংগঠনটি দেশপ্রেম, প্রতিরোধ এবং মর্যাদার এক অনন্য আদর্শ তুলে ধরেছে। তার দাবি, এই আদর্শই লেবাননের জনগণের কাছে হিজবুল্লাহকে শক্তিশালী প্রতিরোধশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
Leave a comment