শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর এক স্কুলছাত্রীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত শিক্ষার্থীর নাম মাইমুনা খাতুন (১৩)। তিনি স্থানীয় কালাপাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী এবং উপজেলার ভালুকাকুড়া গ্রামের মফিজুল ইসলামের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৭টার দিকে নালিতাবাড়ী সদর ইউনিয়নের ভালুকাকুড়া গ্রামে নিজ বাড়ির পাশের নিচু জমি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা প্রথমে দুর্গন্ধ টের পেয়ে কচুরিপানায় ঢেকে রাখা অবস্থায় মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।
পরিবারের বরাতে পুলিশ জানায়, গত শনিবার দুপুরের পর থেকে মাইমুনা নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে পরদিন (রোববার) সন্ধ্যায় পরিবারের পক্ষ থেকে নালিতাবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালালেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়রা বাড়ির পাশের একটি নিচু জমি থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে খোঁজ করতে গিয়ে কচুরিপানার নিচে মরদেহটি দেখতে পান। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে শেরপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
সাক্ষীরা জানান, মরদেহ উদ্ধারের সময় নিহত শিক্ষার্থী বিবস্ত্র অবস্থায় ছিলেন এবং দেহে পচন ধরে গিয়েছিল। এ কারণে অনেকেই ধারণা করছেন, তাকে হত্যার পর মরদেহ গোপন করার জন্য পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। এলাকাজুড়ে এ ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, “মাইমুনার মৃত্যুর কারণ এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। মরদেহটি অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আমরা সবদিক খতিয়ে দেখছি এবং তদন্ত চলছে।”
মাইমুনার মৃত্যুতে স্থানীয়দের মধ্যে শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে মনে করছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং ঘটনার সঙ্গে এলাকাবাসীর কেউ জড়িত থাকতে পারে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাইমুনা পড়াশোনায় ভালো ছিলেন এবং নিয়মিত স্কুলে যেতেন। হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর তারা ভেবেছিলেন হয়তো কোথাও গিয়ে আটকে পড়েছেন। কিন্তু মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তারা ভেঙে পড়েন।
Leave a comment