আওয়ামী লীগকে ‘মাফিয়া ও সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ। তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক চর্চা থেকে দূরে সরে গিয়ে দেশের রাজনীতিকে সংকুচিত করেছে এবং নিজেদের দলীয় কার্যক্রমে গণতন্ত্রকে পরিত্যাগ করেছে।
শনিবার বিকেলে চকরিয়া সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, “শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ এ দেশের জনগণের রাজনীতিকে আর প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা নিজেরাই প্রমাণ করেছে, তাদের ভেতরে গণতন্ত্র নেই। এজন্য তাদেরকে সন্ত্রাসবিরোধী দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশ এখন নির্বাচনী মৌসুমে প্রবেশ করেছে এবং ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি দাবি করেন, “বাংলাদেশের এই নির্বাচন হবে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এটি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করবে এবং রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।” বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে ধানের শীষের পক্ষে সমর্থন আদায়ের আহ্বান জানান।
গত ১৭ বছরের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন বলেন, দেশে কোনো উন্মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ ছিল না। তার ভাষায়, “রাজনীতি বন্দি ছিল কারাগারে, লন্ডনে এবং শিলংয়ে। এখন দেশে আবারও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
হাতপাখা প্রতীকের সঙ্গে যুক্ত আরেকটি রাজনৈতিক দলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, এই দল অতীতে স্বাধীনতা ও জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল এবং বারবার বিভ্রান্তিকর রাজনীতি করেছে।
তবে সংস্কার কমিশনকে ঘিরে চলমান আলোচনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারা কমিশনে গিয়ে দিন কাটাচ্ছে কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত দিচ্ছে না—বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভালোভাবেই চেনে।”
এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব এম মোবারক আলী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমেদ, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান এবং কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না।
উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নিয়ে জনসভায় যোগ দেন, যা পুরো এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
Leave a comment