সুপার টাইফুন ‘বুয়ালয়’ আজ রাতেই ভিয়েতনামে আঘাত হানতে পারে। ইতোমধ্যে ঝড়ের প্রভাব মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে দেশটির সরকার। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত এড়াতে অন্তত দুই লাখ ৫০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি এক লাখের বেশি সেনা সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। চারটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বছর ভিয়েতনামে আঘাত হানতে যাওয়া এটি দশম টাইফুন। বর্তমানে ঝড়টি সাগরে অবস্থান করছে এবং এর বাতাসের গতি ঘণ্টায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার (৮০ মাইল)।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘বুয়ালয়’ অস্বাভাবিক গতিতে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। সাধারণ ঝড়ের তুলনায় এর গতি প্রায় দ্বিগুণ। এ কারণে একইসঙ্গে প্রবল ঝড়ো হাওয়া, ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ধস, আকস্মিক বন্যা এবং উপকূলীয় প্লাবনের ঝুঁকি রয়েছে।
কোয়াং ত্রি প্রদেশে ইতোমধ্যেই দু’টি মাছ ধরার নৌকা ডুবে গেছে। এতে তিনজন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন এবং আটজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঝড়ের গতিপথে থাকা সব মাছ ধরার নৌকাকে তীরে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঝড়ের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে মানুষদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। এর মধ্যে—
• ডা নাং শহরে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে।
• হুয়ে প্রদেশে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে আরও ৩২ হাজার মানুষকে।
• হা তিঙ প্রদেশে অন্তত ১৫ হাজার মানুষকে স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তৈরি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন ইতোমধ্যে জরুরি সতর্কতা জারি করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঝড়ের তাণ্ডব ঠেকাতে উপকূলরেখা সুরক্ষায় স্থানীয় সরকার বালুর বস্তা, বাঁশ, পাথর ও ট্রাক দিয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করছে। পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও নৌযান সুরক্ষিত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, “বুয়ালয় শুধু একটি ঝড় নয়, এটি একটি সুপার টাইফুন। এর প্রভাব ব্যাপক হতে পারে, তাই জনগণকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।”
Leave a comment