বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কোনো বিদেশি নেতা নয়, বরং এই দেশের মানুষই ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “বাংলাদেশটা আমাদের, এর ভবিষ্যৎও আমাদের নির্মাণ করতে হবে। ট্রাম্প, সি চিনফিং কিংবা মোদি এসে আমাদের জন্য কিছু করে দিয়ে যাবেন না।”
শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ক্ষমতায়ন: নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথ’ শীর্ষক আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি। বক্তব্যে তিনি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস, তরুণদের সংগ্রাম এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশ বহু চিন্তার মিশেলে গড়ে উঠেছে। স্বাধীনতা আন্দোলনে যেমন ভিন্নমতের নেতারা এক হয়েছিলেন, আজও আমাদের এক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।” তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনেও তরুণরাই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন তৈরি হয়েছে।
গণতন্ত্র নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে ফখরুল বলেন, “গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। এটি চাপিয়ে দেওয়া যায় না, চর্চা করতে হয়।” তিনি আরও বলেন, “আজকের অর্জনগুলো তরুণদের জন্যই হয়েছে। বায়ান্ন থেকে শুরু করে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন পর্যন্ত তারা ছিলেন আমাদের ভ্যানগার্ড।”
বিএনপির মহাসচিব দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথাও গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “আমাদের কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের কথা কেউ বলে না। অথচ তারাই হাসিমুখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক আরোপ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি কৃষিভিত্তিক জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তি, কাজ ও সহায়তা দেওয়া যায়, তাহলে আমরা সহজেই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব।”
তিনি বলেন, “আমাদের ঐতিহাসিকভাবে রাজনৈতিক সমস্যা আছে এবং থাকবে, কিন্তু তা নিয়ে হতাশ না হয়ে একযোগে কাজ করাই সমাধান।” ইউনূসকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন, আমরা সবাই তাঁকে সহযোগিতা করলে সফলতা আসবে।”
আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ফুয়াদ প্রমুখ। সেমিনারে প্রয়াত রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সাবরিনা ইসলাম রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং এক ভিডিও বার্তায় অংশ নেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সেমিনারজুড়ে ছিল বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, ঐক্যের প্রয়োজন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় অংশগ্রহণের জোরালো বার্তা।
Leave a comment