Home জাতীয় বেক্সিমকো কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ, বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ
জাতীয়

বেক্সিমকো কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ, বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

Share
Share

গাজীপুরের বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ফের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে শ্রমিকরা। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে হাজারো শ্রমিক চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন জ্বালায়। বিক্ষোভ চলাকালে চারটি বাসে অগ্নিসংযোগ এবং অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানায় প্রায় ৪২ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করতেন। গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন নিয়মিত পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে গত ১৫ ডিসেম্বর কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়, যা শ্রমিকদের জন্য ব্যাপক দুর্ভোগের কারণ হয়েছে।

বুধবার বিকেলে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা কাঠ ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিক্ষোভকারীরা চারটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে শ্রমিকরা।

পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে সাংবাদিক ও পুলিশের সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। বিক্ষোভকারীদের হামলায় কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন এবং তাদের ক্যামেরা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা স্থানীয় তেঁতুইবাড়ি এলাকার গ্রামীণ ফেব্রিক্স নামের একটি কারখানায় অগ্নিসংযোগ করে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়তে হয়। পরে দীর্ঘ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমাদের কেউ রাস্তায় নামতে চায় না। বাধ্য হয়ে ন্যায্য পাওনার দাবিতে আন্দোলনে নামতে হয়েছে। আমরা পরিবারের জন্য বাজার করতেও হিমশিম খাচ্ছি। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে আন্দোলন চলবে।”

পরিবহন শ্রমিক আব্দুল খালেক জানান, “শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। এতে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে।”

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, “শ্রমিকরা কয়েকটি বাসে অগ্নিসংযোগ এবং যানবাহন ভাঙচুর করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।”

বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জনসংযোগ কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

বিক্ষোভের ফলে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়, যা সাধারণ যাত্রীদের চরম ভোগান্তির কারণ হয়।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ

বাগেরহাট পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে শ্রমিক দল নেতা আজিম ভূঁইয়া ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে।...

মিছিল-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বাম জোটের ক্ষোভ

রাজধানীতে সভা-সমাবেশ ও মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তাঁরা একে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপচেষ্টা আখ্যা দিয়ে...

Related Articles

নড়াইলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১, আহত ৮

নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন...

ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মহিলা জামায়াতের মানববন্ধন

ধর্ষণের মামলায় ফাঁসির সাজা নির্ধারণসহ নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে পাঁচ দফা...

কাহালুতে খাবার দেওয়ার কথা বলে ২ শিশুকে ধর্ষণ

বগুড়ার কাহালুতে খাবার দেওয়ার কথা বলে ছয় বছর বয়সী দুই শিশুকে ধর্ষণের...

বরিশালে শিশু ধর্ষণের আসামি গণপিটুনিতে নিহত

বরিশালে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত এক যুবক গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৫...