বাংলাদেশে সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে স্টারলিংক সেবা চালু হয়েছে। রাজধানীর একটি হোটেল, ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা এই নতুন স্পেসআইনড স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার প্রথম অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। সম্মেলনের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারের জন্য স্টারলিংকের উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডিইসি) গত ২৯ মার্চ স্টারলিংকের বিনিয়োগ নিবন্ধন প্রদান করেছে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সকল সেবা শুরু করতে পারেবে। তবে, পরিকল্পনার সময়সূচীর আগেই দেশের বিভিন্ন স্থানে স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি, বিশ্বজুড়ে আলোচিত শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কলে অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস স্টারলিংক নিয়ে আলোচনা করেন যা এই সেবার কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করে তোলে। এরপরে, ঢাকায় গত মাসেই বেশ কয়েকবার পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, এই পরীক্ষামূলক যাত্রার মাধ্যমে বাংলাদেশের ডিজিটাল পরিসরে এক নতুন যুগের সূচনা হবে। স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক ইতিমধ্যেই বিশ্বের অনেক দেশে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে, যা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকা এবং শহরের বাহিরে বসবাসরত মানুষের জন্যও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। এবং কমবে শহর ও গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য।
ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বাসা-বাড়িতে স্টারলিংক সেবা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় স্টারলিংক কিটের মূল্য ৩৪৯ থেকে ৫৯৯ ডলার পর্যন্ত, যা প্রায় ৪৩,০০০ থেকে ৭৪,০০০ টাকা হতে পারে।
আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে স্টারলিংকের মাসিক সর্বনিম্ন ফি নির্ধারিত হয়েছে ১২০ ডলার (প্রায় ১৫,০০০ টাকা), যেখানে কর্পোরেট গ্রাহকদের জন্য এই খরচ দ্বিগুণ বা তারও বেশি হতে পারে। তবে, দেশভেদে ও এলাকার ভিত্তিতে এই মূল্যসুচিতে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে।
স্টারলিংক সেবার চালুর ফলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সহজলভ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে শহর ও গ্রামের মধ্যে বিদ্যমান ডিজিটাল বৈষম্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। বিশেষ করে, দূরবর্তী অঞ্চলে বসবাসরত জনগণ, শিক্ষার্থী, এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগতারা উপকৃত হবে, যা দেশের সামগ্রিক ডিজিটাল দিগন্তকে প্রসারিত করবে।
নির্দিষ্ট পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই স্টারলিংক সেবার কার্যক্ষমতা প্রমাণিত হওয়ায়, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দেশের বাহিরে বসবাসরতদের জন্যও এ সেবা একটি আকর্ষণীয় বিকল্প হিসেবে সামনে এসেছে।
Leave a comment