কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বজ্রাঘাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আলাদা দুই ইউনিয়নে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন রিফাতপুর ইউনিয়নের শীতলাইপাড়া গ্রামের সাইফ হোসেন (১৮) এবং প্রাগপুর ইউনিয়নের বিলগাথুয়া মাঠপাড়া গ্রামের জামাত আলী (২৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে সাইফ হোসেন মাঠে কৃষিকাজ করছিলেন। হঠাৎ প্রবল বর্ষণ শুরু হলে বজ্রপাত ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি ওই গ্রামের পলাশ মণ্ডলের ছেলে।
অন্যদিকে একই সময়ে প্রাগপুর ইউনিয়নের বিলগাথুয়া মাঠপাড়ায় মাঠে কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে গুরুতর আহত হন জামাত আলী। দ্রুত স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি একই এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তুহিন বলেন, “সাইফ হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর জামাত আলীকে হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণ পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।”
এদিকে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ জানান, “ঘটনাগুলো প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা। নিয়মিত আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটে। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে মাঠে কাজ করার সময় কৃষক ও শ্রমজীবীরা বেশি ঝুঁকির মুখে থাকেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্ষা মৌসুমে বজ্রপাতের কারণে শত শত প্রাণহানি ঘটে ।
আবহাওয়াবিদরা জানান, বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গায় না থাকা, উঁচু গাছ বা বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে আশ্রয় না নেওয়া এবং ভেজা জমিতে কাজ করা থেকে বিরত থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। এছাড়া জনসচেতনতা ও সতর্কতা বাড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছে।
দৌলতপুরের এই ঘটনাটি আবারও স্মরণ করিয়ে দিল, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে মানুষ কতটা অসহায়। তবে যথাযথ সচেতনতা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকলে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
Leave a comment