নতুন চমক নিয়ে আবারও ফিরল কোক স্টুডিও বাংলা। শনিবার রাতে মুক্তি পেয়েছে নতুন গান ‘বাজি’, যেখানে প্রেমের গল্পকে সাজানো হয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংগীত ঐতিহ্য ও শহুরে লোকসংগীতের অনন্য মিশ্রণে। গানটি লিখেছেন ও কণ্ঠ দিয়েছেন গীতিকার–সুরকার হাশিম মাহমুদ, তাঁর সঙ্গে সংগীতায়োজন ও গানে অংশ নিয়েছেন ইমন চৌধুরী। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের চতুর্থ গান হিসেবে প্রকাশিত ‘বাজি’ ইতিমধ্যেই শ্রোতাদের আগ্রহ কাড়তে শুরু করেছে।
হাশিম মাহমুদের লেখা গানে ধরা পড়েছে এক কোমল প্রেমের আবেগ, যা শ্রোতার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সংগীতের ভেতরে লোকজ ছন্দ, বৈচিত্র্যময় বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার আর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গানটিকে দিয়েছে নতুন মাত্রা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভিজ্যুয়ালের মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনা, যেখানে সংগীত ও নৃত্যের সমন্বয়ে উঠে এসেছে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সংস্কৃতির রূপ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, টাঙ্গাইলের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘ধুয়া গানের দল’ অংশ নিয়েছে এই পরিবেশনায়। পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন বংশীবাদক কিয়ো উ প্রু মারমা ও তাঁর দাদি ম্রাকোইচিং মারমা। বান্দরবানের পাহাড়ি এই শিল্পী ম্রাকোইচিং গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন মারমা ভাষায়, যা প্রায় বিলুপ্তির পথে থাকা পূর্বপুরুষের সংগীতকে নতুন প্রাণ দিয়েছে। তাঁদের এই অবদান সংস্কৃতি সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
এছাড়া, পার্বত্য চট্টগ্রামের বম ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী গানের সঙ্গে ধ্রুপদি নৃত্য পরিবেশন করে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। বাঁশের লাঠি দিয়ে জটিল পায়ের ছন্দে করা নাচ গানে এনেছে বৈচিত্র্য ও আকর্ষণ। একইসঙ্গে মণিপুরী সম্প্রদায়ের পুং ড্রামাররা অসাধারণ অ্যাক্রোবেটিকস পরিবেশন করে গানটিকে করেছে আরও ছন্দময় ও গতিশীল।
গানটি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইমন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কোক স্টুডিও বাংলার ফিরে আসাটা সত্যিই আনন্দের। “বাজি” আমাদের কাছে বিশেষ একটি সৃষ্টি, কারণ এতে অংশ নেওয়া প্রত্যেক শিল্পী তাঁদের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন। কথা, সুর, বাদ্যযন্ত্র, নাচ ও ভিজ্যুয়ালের সমন্বয়ে গানটি বাংলাদেশের এক অনন্য প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।’
গানটি ইতিমধ্যেই কোক স্টুডিও বাংলার ইউটিউব চ্যানেল ও স্পটিফাইয়ে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তির মাত্র ৩৩ মিনিটের মধ্যে গানটি ইউটিউবে সাড়ে তিন হাজারের বেশি বার শোনা হয়েছে। সংগীতপ্রেমীদের মতে, ‘বাজি’ শুধু একটি গান নয়, বরং এটি বাংলাদেশের বহুমাত্রিক লোকসংস্কৃতি ও সমকালীন সংগীতের সেতুবন্ধন।
Leave a comment