জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)–কোমেইতো জোট সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর থেকে দলের অভ্যন্তরে যে অস্থিরতা ও বিভক্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, সেটিই তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, দলীয় ঐক্য ধরে রাখার স্বার্থে ইশিবা নেতৃত্ব ছাড়ার পথ বেছে নিয়েছেন। এলডিপির ভেতর থেকে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে তার বিরুদ্ধে চাপ বাড়ছিল।
চাপের মুখে মত বদল-
প্রথমদিকে পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করে ইশিবা নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। গত সপ্তাহেই তিনি প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তিনি পদে বহাল থাকবেন এবং অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তাসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মনোযোগ দেবেন। এমনকি গত শুক্রবার তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে আগামী মাসগুলোতে নতুন অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেবেন।
কিন্তু দ্রুত পরিস্থিতি বদলায়। জাপান টাইমস জানিয়েছে, দলের প্রবীণ নেতাদের জোরালো পরামর্শেই শেষ পর্যন্ত মত পরিবর্তন করেন ইশিবা। অভিজ্ঞ নেতারা তাকে জানান, তার পদত্যাগই দলীয় ঐক্য ও জনআস্থা ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায়।
এলডিপির অভ্যন্তরীণ সংকট-
উচ্চকক্ষ নির্বাচনে হারের পর থেকেই এলডিপির ভেতরে ক্ষোভ বাড়ছিল। অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, ইশিবা বহাল থাকলে দলের ভেতরে বিভক্তি আরও গভীর হতে পারে এবং বিরোধীদের হাতে রাজনৈতিক সুবিধা চলে যেতে পারে।
এলডিপির সিনিয়র সদস্যদের অনেকে তাই ইশিবার পদত্যাগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এটি দলের ভেতরে আস্থা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি আগামী নেতৃত্ব নির্বাচনের পথ সুগম করবে।
সামনে কী অপেক্ষা করছে?
ইশিবার পদত্যাগ এমন এক সময় এলো, যখন এলডিপি আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে এ বছর আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। ফলে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ঘিরে দলে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইশিবার সরে দাঁড়ানো দলকে তাৎক্ষণিকভাবে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করতে পারে, তবে এটি জাপানের রাজনীতিতে এক অনিশ্চিত অধ্যায়ও খুলে দিয়েছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন এবং তিনি কতটা কার্যকরভাবে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারবেন—সেটিই এখন জাপানের রাজনীতির মূল প্রশ্ন।
Leave a comment