তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি পারফিউমের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। শনিবার (৮ নভেম্বর) ভোররাতে কোকায়েলি প্রদেশের দিলোভাসি শিল্পাঞ্চলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম টিআরটি হাবার জানিয়েছে, দিলোভাসির শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত একটি পারফিউম সংরক্ষণাগারে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে এবং ভয়াবহ আকার ধারণ করে। আগুনের তীব্রতায় ভবনের দ্বিতীয় তলাসহ পুরো কাঠামো প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দমকল বাহিনী, উদ্ধারকারী দল ও স্থানীয় পৌরসভার কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন তারা। স্থানীয় সময় সকাল নাগাদ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তুরস্কের আঞ্চলিক গভর্নর জানান, “এই ঘটনায় আমাদের ছয়জন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল।” প্রাথমিকভাবে আহতের সংখ্যা দুইজন বলা হলেও পরে তা সংশোধন করে একজন নিশ্চিত করা হয়।
তুরস্কের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি-র সম্প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আগুনে গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত দুইতলা ভবনটি পুরোপুরি পুড়ে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে। আগুন নেভানোর পর ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকর্মীদের মরদেহ বের করতে দেখা যায়।
প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে ধারণা করা হচ্ছে, গুদামে সংরক্ষিত দাহ্য রাসায়নিক ও পারফিউমের দ্রব্য আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সহায়তা করেছে। ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে এবং অগ্নিকাণ্ডের উৎস নির্ধারণে ফরেনসিক টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
দিলোভাসি তুরস্কের অন্যতম বৃহৎ শিল্পাঞ্চল, যেখানে শতাধিক গুদাম ও রাসায়নিক প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা রয়েছে। এলাকাটি ইস্তাম্বুল শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্থানীয় প্রশাসনের মতে, ওই অঞ্চলে দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণের কারণে আগুন লাগার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি।
দিলোভাসি পৌর মেয়র বলেন, “আমাদের উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে বড় দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। তবে প্রাণহানির ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক।” তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে নিরাপত্তা পর্যালোচনার নির্দেশ দেন।
Leave a comment