দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আবারও ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে সূচকটি মোট ১২৫ পয়েন্ট বা প্রায় আড়াই শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৭৩ পয়েন্টে। এই অবস্থান সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল গত বছরের ২৮ অক্টোবর, যখন সূচকটি ছিল ৪ হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে। টানা ৯ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে যে দরপতন চলছে, তারই ধারাবাহিকতায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ডিএসইর তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে বাজারের দৈনিক গড় লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৪ শতাংশ কমে গেছে। দৈনিক গড় লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৩৪৪ কোটি টাকায়, যা আগের সপ্তাহের ৩৯৯ কোটি টাকার তুলনায় ৫৫ কোটি টাকা কম। বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩২৪টির বা ৮২ শতাংশের শেয়ারদাম কমেছে। বাড়তি দাম পেয়েছে মাত্র ৫৭টি বা ১৪ শতাংশ কোম্পানি এবং ১৫টি কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ছাড়া প্রায় সব খাতেই ব্যাপক দরপতন দেখা গেছে।
মন্দাবাজারেও কিছু কোম্পানি নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির শেয়ারের দাম ৬ টাকা বা প্রায় ১৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ৪০ পয়সায়। এনার্জিপ্যাক পাওয়ারের শেয়ারের দামও ১৪ শতাংশ বেড়ে ২২ টাকা ৪০ পয়সায় পৌঁছেছে।
এদিকে, গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিচ হ্যাচারি লিমিটেডের শেয়ারে। মোট লেনদেনের প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশই ছিল এই কোম্পানির দখলে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে কোম্পানিটির শেয়ারে। তবে সপ্তাহ শেষে বিচ হ্যাচারি সর্বাধিক দরপতনের শিকার হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৩৮ টাকা ৭০ পয়সা বা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে ৫৮ টাকা ৩০ পয়সায় নেমে এসেছে, যেখানে আগের সপ্তাহে দাম ছিল প্রায় ৯৭ টাকা।
টানা দরপতনের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে রাজধানীর মতিঝিলে একদল ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবি জানান এবং শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে দ্রুত কার্যকর নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন, নইলে বাজারের এই মন্দা দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
Leave a comment