চার মাসের চিকিৎসা শেষে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে বিশ্রামে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। চিকিৎসকদের পরামর্শে গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে দূরে থাকলেও তাঁর গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’র সামনে প্রতিদিনই ভিড় করছেন নেতাকর্মী ও সাধারণ সমর্থকেরা। প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎ না পেলেও তাঁকে একনজর দেখতে বা অন্তত তাঁর অবস্থানস্থল চোখে দেখতে অনেকেই ছুটে আসছেন।
আজ বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ফিরোজার সামনে দেখা যায়, গেটের বাইরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি। দায়িত্ব পালন করছেন চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ)–এর সদস্যরা, তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। মূল ফটকে কারও প্রবেশাধিকার না থাকলেও বহু মানুষ ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন এবং বাসার সামনে দাঁড়িয়ে প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
বেলা পৌনে ৩টার দিকে খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারকে বাসভবনে প্রবেশ করতে দেখা গেলেও দলের অন্য কোনো নেতাকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।
ফিরোজার সামনে আসা দুই নারীর মধ্যে একজন, বাগেরহাট পৌর মহিলা দলের সভাপতি তাসলিমা বেগম বলেন, “৪ মে ঢাকায় এসেছি শুধু ম্যাডামকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। বিমানবন্দর থেকে বাসায় ফেরার পথে রাস্তা থেকে তাঁকে একবার দেখার সুযোগ হয়েছিল।” তাঁর সঙ্গে থাকা একই জেলার মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফাতেমা পান্না বলেন, “জানি দেখা হবে না, তবু অন্তত যেখানেই তিনি থাকেন, সেটা দেখে যাচ্ছি। এই অনুভূতি ভাষায় বোঝানো যায় না।”
বিএনপি সূত্র জানায়, লন্ডনের ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’-এ চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২৫ জানুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া লন্ডনে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন। দীর্ঘ সময় পর গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি দেশে ফেরেন। তাঁর সঙ্গে দুই পুত্রবধূ—জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমানও ঢাকায় ফেরেন।
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের ফিরোজা পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে দলীয় নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে বাসায় পৌঁছান তিনি। বিএনপি নেতারা জানান, চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা এখনো পূর্ণ সুস্থতার পর্যায়ে না পৌঁছানোয় চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি এখন বিশ্রামে আছেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, “চেয়ারপারসনকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে দলের পক্ষ থেকে নেতা–কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন ফিরোজার সামনে ভিড় না করা হয়।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের আবেগ স্বাভাবিক, তবে ম্যাডামের আরোগ্যই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
রাজনীতির মাঠে তাঁর সরাসরি উপস্থিতি না থাকলেও, ফিরোজার সামনে মানুষের এমন উপস্থিতি স্পষ্ট করে দিচ্ছে—দলে ও সমর্থকদের মনে খালেদা জিয়ার প্রভাব এখনো কতটা গভীর।
Leave a comment