খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) চার শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন খুলনা নগরের ফুলবাড়ি গেট এলাকায় এই হামলা চালানো হয়। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ওবাইদুল্লাহ, গালিব রাহাত, শেখ মুজাহিদ এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (টিই) বিভাগের মোহন। বর্তমানে তাঁদের কুয়েট মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন কুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, আহত চারজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী। রাতের খাবারের জন্য ফুলবাড়ি গেটে গেলে হঠাৎ ১২ থেকে ১৫ জন দুর্বৃত্ত তাঁদের ঘিরে ধরে এবং ‘ভিসি মাছুদকে কেন নামাইছিস’ বলেই হামলা শুরু করে। বেধড়ক মারধরের ফলে তাঁদের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে এবং রক্তক্ষরণ হয়।
জানা গেছে, এই চার শিক্ষার্থী সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধকরণ ও প্রশাসনিক পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। হামলার প্রতিবাদে রাতেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মো. আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, ‘ফুলবাড়ি গেটে স্থানীয়দের সঙ্গে কিছুটা ঝামেলার ঘটনা ঘটেছে। চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং তাঁদের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
কুয়েটে চলমান সংকটের সূত্রপাত হয় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে। ওই ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ঘোষণা করে এবং আবাসিক হল ও একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়। যদিও শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছু সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয় এবং হল ও ক্লাস চালুর ঘোষণা দেয়, তবুও উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা অনশন চালিয়ে যান। অবশেষে আন্দোলনের চাপে উপাচার্য ও সহ–উপাচার্য পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
এই পটভূমিতে আজকের হামলার ঘটনায় ক্যাম্পাসে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা দ্রুত হামলাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
Leave a comment