প্রতি বছর ৫ মে পালিত হয় “ইউরোপ দিবস”—একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস যা ইউরোপীয় ঐক্য, মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধকে স্মরণ ও সম্মান জানায়। ১৯৪৯ সালের এই দিনে প্রতিষ্ঠিত হয় কাউন্সিল অফ ইউরোপ (Council of Europe), যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে শান্তি ও সহযোগিতার একটি ভিত্তি স্থাপন করে।
এই সংগঠন ইউরোপের প্রথম প্রধান রাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, যার মূল লক্ষ্য ছিল মহাদেশে মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং সাংবিধানিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করা। বর্তমানে ৪৬টি সদস্য দেশ নিয়ে গঠিত এই কাউন্সিল, ইউরোপীয় সমাজ ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
ইউরোপ দিবস উদযাপনের মূল বার্তা হলো “ঐক্যে শক্তি”—বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন বিশ্বজুড়ে বহুধাবিভক্তি, সংঘাত ও গণতন্ত্রবিরোধী নানা কার্যক্রম বেড়ে চলেছে। এই দিনে ইউরোপজুড়ে বিভিন্ন শহরে আয়োজন করা হয় আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষা কর্মসূচি ও কূটনৈতিক পর্যায়ের সংলাপ, যার মাধ্যমে ইউরোপীয় নাগরিকদের মধ্যে ঐক্য ও সহনশীলতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
কাউন্সিল অফ ইউরোপের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান হলো ১৯৫০ সালে “ইউরোপীয় মানবাধিকার সনদ” (European Convention on Human Rights) প্রণয়ন, যা পরবর্তীতে ইউরোপজুড়ে নাগরিক অধিকারের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে আসছে।
ইউরোপ দিবস যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়, তবে এটি ইউরোপীয় মূল্যবোধ ও একীকরণের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে, ৯ মে তারিখে পালিত হয় আরেকটি “ইউরোপ দিবস”, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সূচনা ও শুমান ঘোষণার স্মরণে পালিত হয়।
বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, ইউরোপ দিবস একটিমাত্র মহাদেশের উপলক্ষ নয়—এটি হয়ে উঠেছে সমগ্র বিশ্বে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার প্রতীক।
Leave a comment