বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনে আবারও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর সোনারগাঁওয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরই বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।
তার মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে।
ইশরাক হোসেন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “বিসিবির জালিয়াতির সিলেকশন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে সাধারণ জনগণ ও ক্রীড়া সংগঠকরা। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেশকে স্থিতিশীল রাখতে এখন কিছু বলা হচ্ছে না। অচিরেই এই জাতীয় বেইমানদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের দেশের আইন মেনেই এই ভুয়া বোর্ড লাথি মেরে ছুড়ে ফেলে দেয়া হবে।”
তার এই বক্তব্য মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন বিসিবি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা নিয়ে।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হয় বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, তিনটি ক্যাটাগরি থেকে ২৩ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। এছাড়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত করেন আরও দুইজন পরিচালককে।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সভাপতি পদে আবারও নির্বাচিত হন সাবেক জাতীয় দলের অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
বিসিবির এই নির্বাচনে নতুন মুখ দেখা না যাওয়ায় অনেকেই একে “পূর্বনির্ধারিত” বলে মন্তব্য করেছেন। ক্রীড়া বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের ক্রিকেট প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে।
পুনর্নির্বাচিত সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল নির্বাচনের পর সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নেই কাজ করব। আগামী দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিতে সবাইকে সঙ্গে চাই। যারা সমালোচনা করছেন, তাদের মতামতও আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করব।”
ইশরাক হোসেনের বক্তব্য রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও সাড়া ফেলেছে। বিএনপির ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, তিনি বিসিবির বর্তমান কাঠামো ও নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে “সরকারঘেঁষা” বলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, ইশরাকের মন্তব্য “অযৌক্তিক ও উসকানিমূলক”। আওয়ামী লীগের এক ক্রীড়া সংগঠক বলেন, “বিসিবির নির্বাচন সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে হয়েছে। ইশরাক হোসেন রাজনৈতিক স্বার্থে বিষয়টিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন।”
সামাজিক মাধ্যমে ইশরাকের পোস্ট ঘিরে চলছে নানা প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ তার বক্তব্যকে সাহসী বলে আখ্যা দিয়েছেন, আবার অনেকে মনে করছেন, ক্রীড়া সংগঠন নিয়ে রাজনৈতিক ভাষা ব্যবহার অনুচিত।
Leave a comment