প্রতি বছর ২৩ মে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘বিশ্ব কচ্ছপ দিবস’। দিনটি উদযাপন শুরু হয় ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ‘আমেরিকান কচ্ছপ রেসকিউ’র উদ্যোগে। কচ্ছপ ও তাদের বাসস্থান সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই দিনটি এখন আন্তর্জাতিকভাবে পালন করা হয় সচেতনতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে।
বিশ্ব কচ্ছপ দিবসের মূল লক্ষ্য হলো কচ্ছপ প্রজাতির প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং তাদের বিলুপ্তির ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। কচ্ছপ হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম জীবিত প্রাণীদের মধ্যে একটি, যাদের অনেক প্রজাতি বর্তমানে বিপন্ন বা মহাবিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত। বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় কচ্ছপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে অতিমাত্রায় আবাসস্থল ধ্বংস, জলবায়ু পরিবর্তন, অবৈধ শিকার ও পাচার—এই সব কারণেই আজ কচ্ছপের অস্তিত্ব হুমকির মুখে।
এই দিবসটি কেবল উদযাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি একটি আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবেশবাদী সংগঠন, গবেষণা কেন্দ্র ও বনবিভাগগুলো নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে। কোথাও কচ্ছপ রক্ষায় সচেতনতামূলক আলোচনা সভা হয়, কোথাও বাচ্চাদের জন্য থাকে ছবি আঁকা ও শিক্ষা কার্যক্রম। এমনকি অনেক স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন মহাসড়কে চলাচলকারী কচ্ছপ উদ্ধার করেও দিবসটি উদযাপন করে থাকে।
বিশ্ব কচ্ছপ দিবসে সবুজ রঙের পোশাক পরার মাধ্যমে অনেকে কচ্ছপের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও হ্যাশট্যাগ প্রচার, ভিডিও বার্তা এবং তথ্যভিত্তিক পোস্টের মাধ্যমে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরা হয়।
এই দিবসটির অন্যতম দিক হলো—মানুষকে এই বার্তাটি পৌঁছে দেওয়া যে কচ্ছপ কেবল একটি প্রাণী নয়, এটি একটি জীবন্ত ইতিহাস, একটি বাস্তুতান্ত্রিক প্রতীক এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হলে কচ্ছপের মতো বিপন্ন প্রাণীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
নিরব, ধীর অথচ দীর্ঘজীবী এই প্রাণীটিকে রক্ষার জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ও জনসচেতনতা। বিশ্ব কচ্ছপ দিবস তাই শুধু একটি দিন নয়, বরং প্রকৃতির জন্য মানুষের দায়বদ্ধতার একটি শক্তিশালী বার্তা।
Leave a comment