রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের, জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আজ রবিবার চেম্বার আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সাংবাদিকদের জানান, জামিন আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানির জন্য আজ দিন নির্ধারিত হয়েছে। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ বলেন, ‘রবিবার এ বিষয়ে শুনানি হবে।’
এর আগে, বুধবার দুপুরে বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান ও বিচারপতি আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন এবং জামিন বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষ, হাইকোর্টের এই আদেশের কয়েক ঘণ্টা পরই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে জামিন স্থগিতের আবেদন করে। সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালত হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য জানান, নিম্ন আদালতে জামিন না পেলেও হাইকোর্ট থেকে চিন্ময়ের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। তবে তার মুক্তির সম্ভাবনা নেই, কারণ মুক্তির প্রক্রিয়া কাগজপত্রের উপর নির্ভরশীল। হাইকোর্টের আদেশ নিম্ন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পৌঁছাতে এক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে।
তিনি আরও জানান, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস পাঁচ মাস ধরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন। অপূর্ব বলেন, ‘পরশুদিন ওনার মা ও আমি কারাফটকে গিয়ে দেখা করেছি। উনি মোটামুটি ভালো আছেন, তবে শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় অনেকটা খারাপ হয়েছে, ওজন কমেছে প্রায় ৭ কেজি। তখনই আমি তাকে জামিনের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলাম।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে চিন্ময়ের নেতৃত্বে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর জেরে ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়, যাতে আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।
পরবর্তীতে চিন্ময়ের নেতৃত্বে ২২ নভেম্বর রংপুরে আরেকটি বড় সমাবেশ হয়। পুলিশ ২৫ নভেম্বর ঢাকায় তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পরদিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সেদিন আদালতের নির্দেশের পর চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ সংঘর্ষে নিহত হন।
পরে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করেন। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী।
Leave a comment