পাবনার ঈশ্বরদীতে মা কুকুরের অগোচরে আটটি কুকুরছানাকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে হত্যার ঘটনায় নিশি রহমান নামে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয় এবং তা সামাজিক ও গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আব্দুন নূরও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানিয়েছেন, মামলার পর গতরাতে তাকে রহিমপুর গার্লস স্কুলের পাশে, ঈশ্বরদী পৌর সদরে অবস্থিত চারতলা ভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, এই ঘটনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ফোন করেছিলেন। তিনি বলেন, ঘটনাটি অমানবিক এবং দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করেছে। মহাপরিচালকও মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনার সাথে জড়িত ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন সোমবার গেজেটেড কোয়ার্টার ছাড়তে লিখিত নির্দেশ পেয়ে বাসা খালি করেছেন।
নিশি রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, “বাচ্চাগুলো আমাদের বাসার সিঁড়ির পাশে থাকতো এবং খুব ডিস্টার্ব করত। তাই আমি বাজারের ব্যাগে ভরে পুকুরের পাশে একটি গাছের গোড়ায় রেখে আসি। কীভাবে পুকুরে পড়েছে জানি না। আমি নিজে ছানাগুলোকে পুকুরে ফেলিনি।”
দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একটি কোণে টম নামের কুকুর বসবাস করত। এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা প্রসব করে। সোমবার সকালে ছানাগুলো না পেয়ে মা কুকুর টমকে কান্না ও ছুটাছুটি করতে দেখা যায়। পরে জানা যায়, শুক্রবার রাতের কোনো এক সময়ে নিশি রহমান ও তার স্বামী ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে দেন। পরদিন সকালে মৃত কুকুরছানাগুলো পাওয়া যায় এবং দুপুরে তাদের মৃতদেহ ইউএনওর বাসভবনের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, এ ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ডে তারা ক্ষুব্ধ ও শোকাহত। প্রাণী হত্যার এই ঘটনায় সামাজিকভাবে নিন্দার ঝড় উঠেছে এবং সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়।
Leave a comment