সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নে বিষ প্রয়োগ করে অজ্ঞাত ব্যক্তি বা একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রায় ২০০ বাক্স মৌমাছি হত্যা করেছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) গভীর রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্থানীয় মৌচাষি ও উদ্যোক্তা ওসমান আলী। ওসমান আলীর মতে, রাতের অন্ধকারে পরিকল্পিতভাবে তার প্রায় ১৮০–২০০টি মৌবাক্সে বিষ ছিটিয়ে দেওয়া হয় । এতে মুহূর্তেই হাজার হাজার মৌমাছি মারা পড়ে। শুধু আর্থিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
তিনি ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এই বক্সগুলোতেই আমার জীবিকা ছিল। সবকিছু শেষ হয়ে গেল। আমাকে পথে বসিয়ে দিলো। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি চাই।”
ওসমান আলীর দাবি, তার এই মৌবাক্সগুলোতে কয়েক লাখ টাকার সম্পদ ও দীর্ঘদিনের শ্রম জড়িত ছিল। এক রাতে সবকিছু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি বিপদে পড়েছেন। পরাগায়ণে মৌমাছির গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে আম, লিচু, সরিষা, তিল, শাকসবজিসহ নানা ফসলের উৎপাদনে মৌমাছির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে এত বড় পরিমাণে মৌমাছি মারা যাওয়াকে বড় ধরনের পরিবেশগত বিপর্যয় হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর একজন বলেন, “এটা শুধু একজন মানুষের ক্ষতি নয়। মৌমাছি না থাকলে ফসল উৎপাদন কমে যাবে। এসব অপরাধীদের ছাড় দিলে ভবিষ্যতে আর কেউ উদ্যোক্তা হতে চাইবে না।” ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “মৌচাষি ওসমান আলী বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে। আমরা তার পাশে আছি। স্থানীয়ভাবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এমন ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।”
এদিকে সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজুর কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, “মৌমাছি শুধু মধু উৎপাদনে নয়—কৃষি ও পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ একজন উদ্যোক্তা নয়, গোটা পরিবেশের জন্য হুমকি।”
Leave a comment